পাখির কাছে ফুলের কাছে সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা

আল মাহমুদের ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কবির নিসর্গপ্রেম গভীর মমত্বের সঙ্গে ফুটে উঠেছে ।এই কবিতায় কবি প্রকৃতির বিচিত্র সৌন্দর্যের কাছে যেতে চান, তাদের সঙ্গে মিশে যেতে চান । এই পোস্টে পাখির কাছে ফুলের কাছে সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

পাখির কাছে ফুলের কাছে সৃজনশীল প্রশ্ন

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
পাহাড়টাকে হাত বুলিয়ে লালদিঘির ঐ পাড়
এগিয়ে দেখি জোনাকিদের বসেছে দরবার।
আমায় দেখে কলকলিয়ে দিঘির কালো জল বললো,
এসো, আমরা সবাই না-ঘুমানোর দল-

বাঁশবাগানের আধখানা চাঁদ
থাকবে ঝুলে একা।
ঝোপে ঝাড়ে বাতির মতো
জোনাক যাবে দেখা।

ক. ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কোথায় আজ কাব্য হবে?

খ. কবি আল মাহমুদের দৃষ্টিতে প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্ক বর্ণনা কর।

গ. কবিতাংশ দুটিতে প্রকৃতির যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘কবিতাংশ দুটিতে কবিদ্বয়ের নিসর্গ-প্রেম ফুটে উঠেছে’-মন্তব্যটি ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ

ক. ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় রক্তজবার ঝোপের কাছে আজ কাব্য হবে।

খ. করি আল মাহমুদের দৃষ্টিতে প্রকৃতির সাথে মানুষের পরম আত্মীয়তার সম্পর্ক বিদ্যমান। ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কবির প্রকৃতিপ্রেম গভীর ভালোবাসায় প্রকাশ পেয়েছে। কবি প্রকৃতির নানা সুন্দর জিনিসের কাছে যেতে ও তাদের সঙ্গে মিশতে চান। তাঁর চোখে প্রকৃতি মানুষের আপন আত্মীয়ের মতো।

গ. কবিতাংশ দুটিতে পল্লি-প্রকৃতির বিচিত্র রূপ ফুটে উঠেছে।

পৃথিবীতে প্রকৃতির নানা সুন্দর রূপ দেখা যায়। মানুষ প্রকৃতিকে আপনজনের মতো অনুভব করে। প্রকৃতি মানুষের মনে নানা প্রভাব ফেলে।
উদ্দীপকের প্রথম অংশে কবি ভালোবাসা দিয়ে গ্রামের প্রকৃতির রূপ বর্ণনা করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, লালদিঘির পাশে পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে। সামনে গেলেই অনেক জোনাকি পোকা দেখা যায়। দিঘির কালো জল যেন কবির সঙ্গে কথা বলে। উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশের কবিতাতেও গ্রামের প্রকৃতির রূপ এসেছে। সেখানে আছে বাঁশবাগান, তার মাঝখানে আধখানা চাঁদ ঝুলছে, আর ঝোপঝাড়ে জোনাকি আলো জ্বেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ঘ. ‘কবিতাংশ দুটিতে কবিষয়ের নিসর্গ-প্রেম ফুটে উঠেছে’-উক্তিটি যথার্থ।

মানুষ প্রকৃতির মাঝে বড় হয়। প্রকৃতি তাকে অনেকভাবে সাহায্য করে। সুখে-দুঃখে প্রকৃতি মানুষের সাথি হয়। নতুন কোনো কাজ শুরু করার উৎসাহও মানুষ প্রকৃতি থেকেই পায়। উদ্দীপকের প্রথম কবিতাংশে কবি গ্রামের প্রকৃতির নানা রূপ ভালোভাবে তুলে ধরেছেন। কবি প্রকৃতিকে ভালোবেসেই এসব সুন্দর রূপ বর্ণনা করেছেন। লালদিঘির পাড়ের পাহাড়, জোনাক পোকার দল, আর দিঘির কালো জলের শব্দ—সব কিছুতেই কবির প্রকৃতিপ্রেম দেখা যায়। দ্বিতীয় কবিতাংশেও কবি প্রকৃতির কথা বলেছেন। যেমন—বাঁশবাগান, চাঁদ, আর জোনাক পোকা, এসব কবির প্রকৃতিপ্রেমকেই প্রকাশ করে। তাই বলা যায়, দুইটি কবিতাংশেই কবির প্রকৃতিপ্রেম দেখা যায়। তাই এই মন্তব্যটি সঠিক।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
একটি টিভি চ্যানেল ‘জীবন ও প্রকৃতি’ নামে একটি অনুষ্ঠান প্রচার করে। অনুষ্ঠানটিতে প্রকৃতির বিচিত্র রূপ, পাহাড়ি দৃশ্য, ঝরনার গতিময় ছন্দ, ফুল ও প্রজাপতির মিলনমেলা, বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, বনে জীবজন্তুর অবাধ বিচরণ, বিভিন্ন কীটপতঙ্গের বিচরণ, নদনদীর ছন্দময় গতি ইত্যাদি দেখানো হয়। শর্মিলী তার বাবার কাছে প্রশ্ন করল, ‘জীবন ও প্রকৃতি’ নামে টেলিভিশনে যে অনুষ্ঠানটি প্রচার করছে তাতে আমাদের শিক্ষণীয় কী? বাবা বললেন, এদের সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে প্রকৃতি পূর্ণতা পায়। এককথায় বলা যায়, এরা একে অপরের পরিপূরক।

ক. কবি আল মাহমুদ কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

খ. কবি ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কীভাবে নিসর্গ-প্রেম প্রকাশ করেছেন?

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত অনুষ্ঠানটি কোন অর্থে ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার প্রতিচ্ছবি?- ব্যাখ্যা কর।

ঘ. শর্মিলীর বাবার সর্বশেষ উক্তির যথার্থতা ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ

ক. কবি আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

খ. কবি ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় নিসর্গপ্রেম বলতে প্রকৃতির প্রতি তাঁর মমত্ব ও প্রেমের কথা বুঝিয়েছেন।

আল মাহমুদের কবিতার প্রাণ হলো বাংলাদেশের গ্রামজীবন আর পল্লির প্রকৃতি। গ্রামের শান্ত-সবুজ রূপ তিনি কবিতায় খুব সুন্দরভাবে দেখিয়েছেন। কবি চান প্রকৃতির নানা রকমের সৌন্দর্যের কাছে যেতে, তাদের সঙ্গে এক হয়ে যেতে। ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কবির এই প্রকৃতিপ্রেম স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত অনুষ্ঠানটি জড়প্রকৃতি আর জীবপ্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কের অর্থে আমার পঠিত ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার প্রতিচ্ছবি।

প্রকৃতির সব উপাদান একসাথে মিলে এর নানা রকম রূপ তৈরি করে। প্রকৃতিতে সবকিছু একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বলেই তা এত সুন্দর লাগে। উদ্দীপকে টিভিতে প্রচারিত ‘জীবন ও প্রকৃতি’ নামের অনুষ্ঠানে প্রকৃতির নানা রূপ দেখানো হয়—পাহাড়, ঝরনার বয়ে চলা, ফুল আর প্রজাপতির মিলন, নানা ধরনের গাছপালা, পশুপাখির স্বাধীন চলাফেরা, নদ-নদীর বয়ে চলার দৃশ্য ইত্যাদি। ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতাতেও আছে নারকেল গাছের মাথায় চাঁদ, লালদিঘির পাড়ে পাহাড়, সামনে জোনাকিদের আলো জ্বালানো, দিঘির কালো জলে ফুলের হাসি, পাখি—সব কিছু মিলে প্রকৃতির নানা রূপ ফুটে উঠেছে। তাই বলা যায়, প্রকৃতির সব উপাদান একসাথে থাকায় উদ্দীপকটি এই কবিতার সঙ্গে মিল পাওয়া যায়।

ঘ. শর্মিলীর বাবার সর্বশেষ উক্তিটি ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার আলোকে যথার্থ হয়েছে।

জড়প্রকৃতি আর জীবপ্রকৃতি মিলে প্রকৃতির পূর্ণ রূপ তৈরি হয়। তাই প্রকৃতির নানা রকম রূপ উপভোগ করা যায়। উদ্দীপকে টিভিতে দেখানো ‘জীবন ও প্রকৃতি’ অনুষ্ঠানটিতে জড়প্রকৃতি ও জীবপ্রকৃতি একসাথে দেখানো হয়েছে, যেখানে দেখা যায় একে অন্যের সাহায্য ছাড়া প্রকৃতি পূর্ণতা পায় না। ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কবি প্রকৃতির নানা জিনিসের মিলিত রূপ দেখিয়েছেন, যা কবির চোখে অনেক রকমভাবে ধরা দিয়েছে। জীবপ্রকৃতি আর জড়প্রকৃতি একে অপরকে যেন পূর্ণ করে তোলে। সবকিছু একসাথে মিলে অনেক সুন্দর একটা রূপ তৈরি করে। তাই বলা যায়, ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতা অনুযায়ী শর্মিলীর বাবার শেষ কথা যথার্থ।

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩।
বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই
মাগো, আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই?
পুকুর ধারে, নেবুর তলে থোকায় থোকায় জোনাই জ্বলে,
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, একলা জেগে রই।

ক. আল মাহমুদ কোথায় চাকরি করেন?

খ. “আমরা সবাই না ঘুমানোর দল” কেন বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকটি ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? দেখাও।

ঘ. “উদ্দীপকের খুকির জেগে থাকা এবং কবিতার না ঘুমানোর দল এক নয়”- উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪।
জীবন ও প্রকৃতি একে অপরের পরিপূরক। একটি ছাড়া আর একটি পূর্ণতা লাভ করতে পারে না। একটির অস্তিত্বের সাথে আর একটির অস্তিত্ব কোনো না কোনোভাবে জড়িয়ে থাকে। জীব ও জড় উভয়েই প্রকৃতির একটি গভীর প্রগাঢ় সম্পর্কে আবদ্ধ। এ দুটোকে বিচ্ছিন্নভাবে ভাবা যায় না।

ক. ডাবের মতো ঠান্ডা ও গোলগাল কী?

খ. “ঝিমধরা এই মস্ত শহর কাঁপছিল থরথর।” এখানে ‘থরথর’ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. জীব ও জড় উভয়ই প্রকৃতির একটি গভীর প্রগাঢ় সম্পর্কে আবদ্ধ। উক্তিটি ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫।
সমতল ভূমির বিশালতা, তার এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে সবুজাভসুউচ্চ পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে লুকোচুরি করছে সাদা সাদা মেঘ। বৃষ্টি হলে পাহাড় বেয়ে নেমে আসে পানি, চিকচিক করে সূর্যের আভা। অনতিদূরে হাওর। হাওরের বুকে নানা জাতের মাছ, পাখির ডুবো খেলা।

ক. কবি চাঁদকে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?

খ. ‘ঝিমধরা এই মস্ত শহর’- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপক এবং ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় প্রকৃতিপ্রেমেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।”- মূল্যায়ন কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
গড়াই নদীর তীরে,
কুটীরখানিরে লতাপাতা ফুল মায়ায় রয়েছে ঘিরে।
বাতাসে হেলিয়া, আলোতে খেলিয়া সন্ধ্যা সকালে ফুটি,
উঠানের কোণে বুনো ফুলগুলি হেসে হয় কুটি কুটি।
মাচানের ‘পরে সিম-লতা আঁর লাউ-কুমড়ার ঝাড়,
আড়াআড়ি করি দোলায় দোলায় ফুল ফল যত যার।

ক. ‘কর্ণফুলী’ পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

খ. “ঝিমধরা এই মস্ত শহর”- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার কোন দিকটি ফুঠে উঠেছে?

ঘ. উদ্দীপকের সঙ্গে আলোচ্য কবিতার মূলভাবের পার্থক্য রয়েছে-মন্তব্যটি বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
চালতাফুল কি আর ভিজিবে না শিশিরের জলে
নরম গন্ধের ঢেউয়ে?
লক্ষ্মীপেঁচা গান গাবে না কি তার লক্ষ্মীটির তরে?
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে!

ক. ‘কলরব’ শব্দের অর্থ কী?

খ. দিঘির কালো জল কবিকে কী বলেছিল? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে?

ঘ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটিই কবিতার মূল বিষয়বস্তু- মন্তব্যটি সম্পর্কে তুমি কি একমত? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দেখাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮।
চারিদিকে শান্ত বাতি- ভিজে গন্ধ- মৃদু কলরব;
খেয়ানৌকাগুলো এসে লেগেছে চরের খুব কাছে;
পৃথিবীর এইসব গল্প বেঁচে র’বে চিরকাল;-
এশিরিয়া ধুলো আজ- বেবিলন ছাই হয়ে আছে।

ক. কোথায় জোনাকিদের দরবার বসেছে?

খ. “এগিয়ে দেখি জোনাকিদের বসেছে দরবার।”- কথাটি বুঝিয়ে লেখ।

গ. উদ্দীপকে ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার কোন দিকটি প্রধান হয়ে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপকের সঙ্গে ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতার প্রাকৃতিক অনুষঙ্গের মিল থাকলেও ভাবার্থের দিক থেকে সম্পূর্ণ অমিল।”- তোমার মতামত তুলে ধর।

নিচে উত্তরসহ পাখির কাছে ফুলের কাছে সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

পাখির কাছে ফুলের কাছে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

Related Posts

Leave a Comment