আল মাহমুদের ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় কবি প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের সাথে কথা বলেন। চাঁদ, পাহাড়, দিঘি, জোনাকি, ফুল এবং পাখি সবাই তার বন্ধু। তারা কবির মনের কথা শুনতে চায় এবং তাকে কবিতা লেখায় অনুপ্রেরণা দেয়। এই পোস্টে পাখির কাছে ফুলের কাছে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।
পাখির কাছে ফুলের কাছে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন
১। আল মাহমুদের দৃষ্টিতে প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্ক বর্ণনা করো।
উত্তরঃ আল মাহমুদের কবিতায় প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্ক গভীরভাবে হয়েছে। তাঁর দৃষ্টিতে প্রকৃতি কেবল একটি বাহ্যিক সৌন্দর্যের উৎস নয়, বরং মানুষের একান্ত সঙ্গী। তিনি প্রকৃতিকে একজন সজীব সত্তা হিসেবে কল্পনা করেন, যার সঙ্গে মানুষ ভাবের বিনিময় করতে পারে, সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিতে পারে।
২। কবি পাখির কাছে ফুলের কাছে কবিতায় কিভাবে নিসর্গ প্রেম প্রকাশ করেছেন?
উত্তরঃ আল মাহমুদ তাঁর ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কবিতায় নিসর্গপ্রেম অত্যন্ত প্রাণবন্তভাবে প্রকাশ করেছেন। কবি প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গে মিশে তাদের সজীব ও অনুভূতিপ্রবণ হিসেবে কল্পনা করেন। চাঁদ, দিঘি, পাহাড়, ফুল, পাখি, জোনাকিরা এখানে শুধু প্রকৃতির নিস্তব্ধ উপাদান নয়, বরং তারা কবির সঙ্গী হয়ে ওঠে।
৩। কবি চাঁদকে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তরঃ কবি চাঁদকে ডাবের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, “ডাবের মতো চাঁদ উঠেছে ঠান্ডা ও গোলগাল।” এই তুলনার মাধ্যমে চাঁদের গোলাকৃতি এবং শীতলতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ডাব যেমন মসৃণ, গোল ও ভিতরে ঠান্ডা জলধারী, তেমনি পূর্ণিমার চাঁদও মৃদু আলো ছড়িয়ে স্নিগ্ধতা প্রকাশ করে।
৪। কবি কেন ঘরের ছিটকিনি খুলে বাইরে গেলেন?
উত্তরঃ কবি রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছিটকিনি খুলে বাইরে গেলেন। রাতের প্রকৃতি, বিশেষ করে পূর্ণিমার আলোয় স্নাত পরিবেশ তাঁকে মোহিত করেছে। শহরের নীরবতা, দিগন্তে উঠা চাঁদ, চারপাশের রহস্যময় আবহ তাঁকে আকর্ষণ করছিল।
৫। শহরটির বর্ণনা কেমন দিয়েছেন কবি?
উত্তরঃ কবি শহরটিকে “ঝিমধরা” এবং “থরথর কাঁপা” অবস্থায় দেখেছেন। এর অর্থ শহরটি গভীর রাতে নিস্তব্ধ, তবে এক অদ্ভুত রহস্যময় আন্দোলন যেন সেখানে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নিস্তব্ধতা যেন প্রকৃতির এক গোপন ভাষা, যা কেবল কবি অনুভব করতে পারেন।
৬। লালদিঘির পাড়ে কবি কী দেখলেন?
উত্তরঃ কবি লালদিঘির পাড়ে গিয়ে দেখলেন, সেখানে জোনাকিদের এক আশ্চর্য দরবার বসেছে। এখানে জোনাকিদের আলোকে কবি এক রাজকীয় সভার মতো কল্পনা করেছেন, যেখানে প্রকৃতি আপন নিয়মে এক মোহময় সৌন্দর্য রচনা করেছে।
৭। “দিঘির কালো জল কলকলিয়ে বললো, এসো”—ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ দিঘির জল কলকল শব্দ করে কবিকে ডাকল এবং বলল, “এসো, আমরা সবাই না-ঘুমানোর দল।” দিঘির জল যেন কবির বন্ধু হয়ে তাকে প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসতে ডাকে। এই ডাকে কবি অনুপ্রাণিত হন এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে এগিয়ে যান।
৮। কবিতায় ‘না-ঘুমানোর দল’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘না-ঘুমানোর দল’ বলতে প্রকৃতির সেই অংশকে বোঝানো হয়েছে, যা রাতেও জেগে থাকে। জোনাকি, দিঘির জল, ফুল এবং পাখিরা সবাই এই দলের অংশ। তারা কবিকে তাদের সাথে যোগ দিতে ডাকে, যেন কবিও প্রকৃতির এই আনন্দময় পরিবেশে শামিল হন।
৯। কবিতায় কবি কীভাবে প্রকৃতির সাথে মিশে যান?
উত্তর: কবি প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের সাথে কথা বলেন এবং তাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেন। তিনি পাখি, ফুল, দিঘি এবং পাহাড়ের সাথে মিশে যান, যা তার মনের ভাবনা প্রকাশ করে। প্রকৃতির সৌন্দর্য কবির মনে গভীর প্রভাব ফেলে এবং তাকে কবিতা লেখায় অনুপ্রাণিত করে।
১০। কবিতায় প্রকৃতির সৌন্দর্য কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তর: কবিতায় প্রকৃতির সৌন্দর্য চাঁদ, পাহাড়, দিঘি, জোনাকি, ফুল এবং পাখির মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। এই সবকিছু মিলে প্রকৃতির এক প্রাণবন্ত রূপ তৈরি করেছে। কবি প্রকৃতির এই সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন এবং তার মনের ভাবনা প্রকাশ করেন।
১১। মিনারটাকে দেখে কবির কী মনে হলো?
উত্তরঃ কবি মিনারটাকে দেখে মনে করলেন যেন কেউ দাঁড়িয়ে আছেন। মিনারের স্থিতিশীলতা ও শৈল্পিক কাঠামো তাঁকে এক অচেনা মানুষের মতো মনে করায়। কবি যেন মনে করছেন, মিনার এক নীরব সাক্ষী, যিনি রাতের নির্জনতায় দাঁড়িয়ে আছেন।
১২। পাথরঘাটার গির্জাকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তরঃ কবি পাথরঘাটার গির্জাকে “লাল পাথরের ঢেউ” হিসেবে কল্পনা করেছেন। এটি এক অভিনব উপমা, যেখানে গির্জার স্থাপত্যের গাম্ভীর্য এবং লালচে রঙের প্রভাব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
১৩। দিঘির জল কবিকে কী বলল?
উত্তরঃ দিঘির জল কবিকে বলল, “এসো, আমরা সবাই না-ঘুমানোর দল”। অর্থাৎ, রাতের নিরবতা আর প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে যারা জেগে থাকে, তারা সবাই যেন এক অনন্য সম্প্রদায়। কবি নিজেও এই জাগ্রত প্রকৃতির একজন অংশীদার হয়ে যান।
Related Posts
- ঝিঙে ফুল কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর (জ্ঞানমূলক)
- চলো বৃত্ত চিনি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও বহুনির্বাচনি – ৭ম শ্রেণির গণিত
- আষাঢ়ের এক রাতে গল্পের এক কথায় প্রশ্ন উত্তর ও সৃজনশীল প্রশ্ন -৭ম শ্রেণি
- সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়ন নির্দেশিকা pdf ২০২৪ (বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস)
- আমার বাড়ি কবিতার মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা