নোলক কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন – ৭ম শ্রেণি

আল মাহমুদ তার ‘নোলক’ কবিতার মধ্যে শুধু এক ব্যক্তির হারানো গয়না বা নোলক খোঁজার কাহিনী বর্ণনা করেননি, বরং এর মাধ্যমে বাংলার প্রাকৃতিক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, এবং প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার একটি প্রতীকী চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। এই পোস্টে নোলক কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন – ৭ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

নোলক কবিতার প্রশ্ন উত্তর (এক কথায়)

১) ‘নোলক’ কবিতাটি কে লিখেছেন? কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে?

উত্তর: কবিতাটি আল মাহমুদ লিখেছেন। এটি তাঁর ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে।

২) কবি বনকে কী বলে সম্বোধন করেছেন? বন কবিকে কী দিতে চেয়েছিল?

উত্তর: কবি বনকে “সবুজ বনের হরিৎ টিয়ে” বলে সম্বোধন করেছেন। বন কবিকে “ফুলের গন্ধ” দিতে চেয়েছিল।

৩) ‘নোলক’ কবিতায় নিজেদের বনের সাধারণ বলে পরিচয় দিয়েছে কারা?

উত্তর: পাখপাখালি (বিভিন্ন ধরনের পাখি) নিজেদের বনের সাধারণ বলে পরিচয় দিয়েছে।

৪) বন তার সবুজ চুলে কী পরে? কবিতায় আহার ভরা বুক কার?

উত্তর: বন তার “সবুজ চুলে” “ফুল পরে। কবিতায় “আহার ভরা বুক” পাহাড়ের।

৫) হরিণের কাছে নোলকের সন্ধান নিতে গেলে তারা কী করে? কবির মায়ের কী হারিয়ে গেছে?

উত্তর: হরিণেরা “পাতার ফাঁকে মুখ বাঁকিয়ে” রেখে কবির মায়ের নোলক সম্পর্কে কিছু জানায়নি। কবির মায়ের “সোনার নোলক” হারিয়ে গেছে।

৬) কবি সোনার নোলক কোথায় খুঁজেছেন? কবি কী ছাড়া ঘরে ফিরবেন না?

উত্তর: কবি সোনার নোলক নদী, বন, পাখি ইত্যাদির কাছে খুঁজেছেন। কবি “মায়ের নোলক ছাড়া ঘরে ফিরবেন না” বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

৭) সবুজ বনের কোন পাখি ঝিকমিক করে? কবির মায়ের নোলক মূলত কীসের প্রতীক?

উত্তর: হরিৎ টিয়ে (সবুজ রঙের টিয়ে) ঝিকমিক করে। কবির মায়ের “নোলক” মূলত বাংলার হারানো ঐতিহ্য, শাশ্বত সম্পর্ক, এবং মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসার প্রতীক।

৮) হাজার হরিণ কোথায় মুখ বাঁকিয়ে রাখে? কে বলে আমার শরীর ভরা বোয়াল মাছে?

উত্তর: হাজার হরিণ “পাতার ফাঁকে মুখ বাঁকিয়ে রাখে”। নদী কবিকে বলে “আমার শরীর ভরা বোয়াল মাছে”।

৯) সাদা পালক বকেরা কোথায় সাথ ছড়িয়ে থাকে? কবি তাল ছাড়িয়ে দল হারিয়ে কোথায় গেলেন?

উত্তর: সাদা পালক বকেরা “তিতাস নদীর বাঁকে” সাথ ছড়িয়ে থাকে। কবি তাল ছাড়িয়ে দল হারিয়ে বনের দিক চলে যান, যেখানে তিনি নোলক খোঁজেন।

১০) পাহাড়ের বুক কীসে ভরা? কবি হারিয়ে যাওয়া গয়না নিয়ে কোথায় যেতে চান?

উত্তর: পাহাড়ের বুক “আহার ভরা”। কবি হারিয়ে যাওয়া “গয়না” নিয়ে ঘরে ফিরে যেতে চান।

১১) কীসের জন্য হাত পাততে বলেছিল? নোলক কবিতায় কোন নদীর কথা উল্লেখ আছে?

উত্তর: ফুলের গন্ধ চাওয়ার জন্য হাত পাততে বলা হয়েছিল। কবিতায় “তিতাস নদী” এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

১২) আল মাহমুদ কত সালে জন্মগ্রহণ এবং কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তর: আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০১৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

নোলক কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

(১) ‘নোলক’ কবিতার কবি সম্পর্কে লেখ। ‘নোলক’ কবিতার মূলভাব কী?

আল মাহমুদ বাংলাদেশের প্রধান কবিদের একজন। তিনি ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০১৯ সালে
মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কবিতার বইয়ের মধ্যে আছে ‘লোক লোকান্তর’, ‘কালের কলস’, ‘সোনালি
কাবিন’ ইত্যাদি। নিচের ‘নোলক’ কবিতাটি কবির ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ নামের কবিতার বই থেকে
নেওয়া হয়েছে।

কবিতাটি ‘নোলক’ মূলত হারানো ঐতিহ্য এবং মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসার প্রতীক। কবি তাঁর মায়ের হারানো সোনার নোলক খুঁজতে বেরিয়েছেন, যা আসলে বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য, এবং ভালোবাসার একটি প্রতীক। কবি মনে করেন যে, আমাদের ঐতিহ্য এবং প্রাকৃতিক সম্পদ হারিয়ে যাচ্ছে, আর তিনি সেই হারানো সম্পদকে পুনরুদ্ধার করতে চান।

(২) কবি তার মায়ের নোলক খুঁজতে কোথায় কোথায় যান?

কবি তাঁর মায়ের সোনার নোলক খুঁজতে নদী, বন, পাখি এবং হরিণ সব জায়গাতেই গেছেন। প্রথমে তিনি তিতাস নদীতে গিয়েছিলেন, কিন্তু নদী তাকে জানায় যে, সেখানে তার বোয়াল মাছের শরীরে বাসা রয়েছে এবং তাকে স্পর্শ করলে ক্ষতি হতে পারে। তারপর তিনি বনে গিয়েছিলেন, যেখানে পাখি তাকে জানান যে তাদের কাছে কোনো নোলক নেই। শেষে তিনি হরিণের কাছে যান, কিন্তু সেখানেও কোনো নোলক পাওয়া যায়নি।

(৩) পাখপাখালিরা কবিকে ফুলের গন্ধ দিতে চায় কেন?

পাখপাখালি (বিভিন্ন ধরনের পাখি) কবিকে ফুলের গন্ধ দিতে চায় কারণ তাদের কাছে কোনো নোলক (যা এক ধরনের অলংকার) নেই, তবে তারা কবিকে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপহার দিতে চায়। পাখি জানায়, ফুলের গন্ধ পেতে হলে কেবল হাত বাড়িয়ে নিতে হবে। এখানে কবি প্রকৃতির সৌন্দর্য, সাদাসিধে জীবন এবং ঐতিহ্য হারানোর বিষয়টি তুলে ধরছেন। প্রকৃতির কাছে মূল্যবান কিছু চাওয়ার জন্য কোনো বাধা বা কঠিন প্রচেষ্টা দরকার নেই, তবে ঐতিহ্য ও নোলক হারিয়ে গেছে, যা ফিরে পাওয়ার জন্য কিছু চেষ্টার প্রয়োজন।

(৪) ‘আমার মায়ের গয়না ছাড়া ঘরকে যাব না’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

কবি এই কথার মাধ্যমে তাঁর মায়ের হারানো নোলক (যা মূলত বাংলার ঐতিহ্য ও শেকড়ের প্রতীক) সম্পর্কে গভীর অনুভূতি প্রকাশ করছেন। কবি জানাচ্ছেন যে, যতদিন তার মায়ের হারানো নোলক ফিরে না আসে, ততদিন তিনি ঘরে ফিরবেন না। এর মাধ্যমে কবি তাঁর দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং মাতৃভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং কর্তব্যবোধের কথা বলছেন। এটি কবির দৃঢ় সংকল্প এবং মাতৃভূমির প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও কর্তব্যবোধের প্রকাশ।

(৫) ‘আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেল শেষে’ চরণটিতে কী বুঝানো হয়েছে?

এই চরণটি দিয়ে কবি বোঝাচ্ছেন যে, তার মায়ের সোনার নোলক (প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বাংলার ঐতিহ্য) হারিয়ে গেছে। এটি এমন এক নিদর্শন, যা প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির হারিয়ে যাওয়ার প্রতীক। কবি মনে করেন যে, যেভাবে মায়ের নোলক হারিয়ে গেছে, তেমনি আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ঐতিহ্যও ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এই চরণে কবি আমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন যে, আমাদের হারানো ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ পুনরুদ্ধার করা জরুরি।

(৬) নোলক কী? নোলক কবিতায় কবি কী খুঁজে ফিরছেন?

নোলক হলো মাথার অলংকার বা গহনা, যা পুরনো দিনের মহিলারা নাকে পরতেন। তবে কবিতায় নোলক শুধু একটি অলংকার নয়, এটি একটি প্রতীক। কবি তার মায়ের হারানো নোলক খুঁজে ফিরছেন, যা আসলে বাংলার হারানো ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ, এবং মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসার প্রতীক। কবি নোলক খুঁজে ফিরছেন, মানে তিনি হারানো ঐতিহ্য, প্রকৃতি এবং সংস্কৃতির পুনরুদ্ধার করতে চান।

নোলক কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

১। রচনামূলক প্রশ্নঃ(দৃশ্যপট নির্ভর)

কালের গর্ভে হারিয়েছি যা

 তা কি পাওয়া যাবে আর

বাংলার যত ঐতিহ্য কুষ্টি অলঙ্কার

জারি সারি পালা হারিয়েছে কোথা

কেউ তা রাখেনি খোঁজা 

পুতুল নাচ আর যাত্রা পালা । 

এসব ও হলো নিখোঁজ ।

ক) ওপরের কবিতাংশে কবিতার যে বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান তা খুঁজে বের কর ।

খ) ওপরের কবিতার মূলভাব আর নোলক’ কবিতার মূলভাব কী সমার্থক? মতামত ব্যক্ত কর।

উত্তরঃ
ক) উপরের কবিতায় কবি বাংলার হারানো ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি নিয়ে গভীর দুঃখ ও আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। কবি বলেছেন যে, কুষ্টি অলংকার, জারি সারি পালা, পুতুল নাচ ও যাত্রা পালা—এসব একসময় বাংলার সংস্কৃতির অংশ ছিল, কিন্তু এখন আর সেগুলো নেই, হারিয়ে গেছে। কবি এখানে কালের পরিবর্তনের কারণে ঐতিহ্য হারানোর কষ্ট এবং স্মৃতির ক্ষতি নিয়ে কথা বলেছেন। এসব হারানো ঐতিহ্যকে তিনি নিখোঁজ বলছেন, যেন এগুলো আর ফিরে আসবে না। কবি সোজা ভাষায় আমাদের জানিয়ে দিচ্ছেন যে, আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য যত্ন না নেওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কবিতার ভাষা বেদনাদায়ক এবং আত্মবোধ প্রকাশকারী, যা আমাদের এই হারানো ঐতিহ্য সম্পর্কে ভাবতে শেখায়।


খ) হ্যাঁ, ‘নোলক’ কবিতার মূলভাব এবং ওপরের কবিতার মূলভাব অনেকটাই এক। উভয় কবিতাতেই ঐতিহ্য হারানোর দুঃখ এবং অতীতের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রতি আকুলতা প্রকাশ করা হয়েছে। ‘নোলক’ কবিতায় কবি তাঁর মায়ের হারানো সোনার নোলক খুঁজছেন, যা আসলে বাংলার হারানো ঐতিহ্য এবং প্রকৃতির প্রতীক। এর মাধ্যমে কবি আমাদের জানান যে, ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে, এবং আমরা তা ফিরে পেতে চাই। একই রকম, ওপরের কবিতায়ও কবি বাংলার হারানো সংস্কৃতির কথা বলেছেন—যেমন জারি-সারি, যাত্রা পালা, পুতুল নাচ—এগুলোও একসময় আমাদের সংস্কৃতির অংশ ছিল, কিন্তু আজ তা আর পাওয়া যায় না। দুই কবিতাতেই ঐতিহ্য রক্ষা করার গুরুত্ব এবং হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে। তাই, এই দুটি কবিতার মধ্যে অনেকটা একই ধারণা বা মূলভাব রয়েছে, যেখানে হারানো ঐতিহ্যকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা এবং আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে।

২। রচনামূলক প্রশ্নঃ(দৃশ্যপট নির্ভর)

পরিচয়ে আমি বাঙালি, আমার আছে ইতিহাস গর্বের- কথনোই ভয় করি নাকো আমি উদ্যত কোন খড়গের। শত্রুর সাথে লড়াই করেছি, স্বপ্নের সাথে বাস ; অস্ত্রেও শান দিয়েছি যেমন শস্য করেছি চাষ; | একই হাসিমুখে বাজায়েছি বাঁশি, গলায় পরেছি ফাঁস; আপস করিনি কখনোই আমি- এই হলো ইতিহাস ।

ক) কবিতাংশে নোলক কবিতার যে সাদৃশ্য রয়েছে তা ব্যাখ্যা কর ।

খ) কবিতাংশের মূলভাব ও নোলক’ কবিতার মূলভাব কী সমার্থক? যৌক্তিক মতামত দাও ।

উত্তরঃ
ক) এই কবিতাংশে যে বিষয়টি বিশেষভাবে দেখা যায়, তা হলো ঐতিহ্য ও সংগ্রামের গর্ব। কবি তাঁর বাঙালি পরিচয়ে গর্বিত এবং তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি যুদ্ধ করেছেন, সংগ্রাম করেছেন এবং কখনো আত্মসমর্পণ করেননি। ঠিক যেমন ‘নোলক’ কবিতায় কবি বাংলার হারানো ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি গভীর আগ্রহ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ‘নোলক’ কবিতায় কবি তার মায়ের হারানো সোনার নোলক খুঁজে ফিরছেন, যা বাংলার হারানো ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। এখানে দুটি কবিতায়ই রয়েছে সংগ্রামের মনোভাব—কবি ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চান, বা ঐতিহ্য রক্ষা করতে চান। এক কথায়, ‘নোলক’ কবিতার মতোই এই কবিতায়ও ঐতিহ্য ও সংগ্রামকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যেখানে কবি ঐতিহ্য রক্ষা এবং সংগ্রামের চেতনা প্রকাশ করেছেন।


খ) হ্যাঁ, এই কবিতাংশের মূলভাব এবং ‘নোলক’ কবিতার মূলভাব প্রায় একই। উভয় কবিতাতেই ঐতিহ্য রক্ষা এবং সংগ্রামের কথা বলা হয়েছে। কবিতাংশে কবি তাঁর বাঙালি পরিচয়ে গর্বিত এবং জানিয়েছেন যে, তিনি লড়াই করতে জানেন, কখনো অপসারণ করেননি। তার ঐতিহ্য রক্ষার মনোভাব স্পষ্ট। একইভাবে, ‘নোলক’ কবিতায়ও কবি তার মায়ের হারানো সোনার নোলক খুঁজে ফেরার চেষ্টা করেন, যা বাংলার হারানো ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক। ঐতিহ্য রক্ষা এবং সংগ্রামের চেতনা এখানে প্রধান থিম। দুটি কবিতাতেই কবি জানিয়েছেন যে, ঐতিহ্য হারানোর পরেও তা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে এবং সংগ্রাম করতে হবে।তাহলে, উভয় কবিতায়ই যে মূল ভাবনা আছে তা হলো ঐতিহ্য রক্ষা এবং সংগ্রাম, এবং এটা একে অপরের সঙ্গে বেশ সাদৃশ্যপূর্ণ।

Related Posts

3 thoughts on “নোলক কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন – ৭ম শ্রেণি”

  1. Ремонт бампера автомобиля — это популярная услуга, которая позволяет обновить изначальный вид транспортного средства после небольших повреждений. Современные технологии позволяют исправить потертости, трещины и вмятины без полной замены детали. При выборе между ремонтом или заменой бампера [url=https://telegra.ph/Remont-ili-zamena-bampera-05-22]https://telegra.ph/Remont-ili-zamena-bampera-05-22[/url] важно учитывать уровень повреждений и экономическую выгодность. Экспертное восстановление включает выравнивание, грунтовку и покраску.

    Смена бампера требуется при серьезных повреждениях, когда ремонт бамперов нецелесообразен или невозможен. Цена восстановления определяется от состава изделия, масштаба повреждений и модели автомобиля. Полимерные элементы поддаются ремонту лучше железных, а инновационные композитные материалы требуют профессионального оборудования. Профессиональный ремонт продлевает срок службы детали и обеспечивает заводскую геометрию кузова.

    С удовольствием бы помочь по вопросам Пежо 308 ремонт бамперов – пишите в Телеграм cbw51

  2. Ein Casino im Intsrnet ist eine plattform, aauf der nutzer
    verschiedene glücksspielmöglichkeiten wie tischspiele und karten genießen können. Egal,
    ob Sie ein Anfänger, Online-Casinos bieten vielfältige optionen für jedes spielniveau.

    Vieoe plattformen bieten attraktive bonusangebote, um neukunden zu belohnen.Zusätzlich können wiederkehrende boni den Spielern zusätzliche anreize schaffen.

    Transaktionen in online-casinos sind sicher,
    mit optionen wie banküberweisungen, die schnelle einzahlungen ermöglichen. Sicherheit und fairness snd iin guten casinos garantiert.

    Die welt der online-casinos ist aufregend für spieler, die auf der suche
    nach großen gewinnen sind. https://de.trustpilot.com/review/n1bet-casino.top

Leave a Comment