নিমগাছ গল্পের জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

‘নিমগাছ’ গল্পে বনফুল সূক্ষ্মভাবে সামাজিক বাস্তবতার প্রতিফলন করেছেন। গল্পে নিমগাছের ঔষধি গুণ এবং এর উপকারিতা প্রকাশ পেয়েছে, পাশাপাশি লক্ষ্মী বউয়ের জীবনযাপন এবং তার প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের দিকটিও গভীরভাবে আলোকিত হয়েছে। এই পোস্টে নিমগাছ গল্পের জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।

নিমগাছ গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

১। নিমের হাওয়া ভালো, থাক, কেটো না।- কারা বলে?
উত্তর: নিমের হাওয়া ভালো, থাক, কেটো না।- এই কথাটি বিজ্ঞরা বলে।

২। ‘কবিরাজ’ অর্থ কী?
উত্তর: ‘কবিরাজ’ শব্দের অর্থ- যিনি গাছগাছালি পরিশোধন করে মনুষ্যরোগের চিকিৎসা করেন।

৩। ‘শিলে পেষা’ অর্থ কী?
উত্তর:  ‘শিলে পেষা’ অর্থ ‘শিল-পাটায় বাটা’।

৪। নিমগাছ কোন রোগের মহৌষধ?
উত্তর: নিমগাছ চর্মরোগের মহৌষধ।

৫। কারা নিমগাছের প্রশংসায় পঞ্চমুখ?
উত্তর: কবিরাজরা নিমগাছের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

৬। নিমের কচি পাতাগুলো অনেকে খায় কেন?
উত্তর: নিমের কচি পাতাগুলো অনেকে খায় কারণ তা যকৃতের পক্ষে ভারি উপকারী।

৭। লোকে নিমগাছের কচি ডাল চিবোয় কেন?
উত্তর: নিমের কচি ডাল চিবোলে দাঁত ভালো থাকে বলে লোকে নিমগাছের কচি ডাল চিবোয়।

৮। বনফুলের প্রকৃত নাম কী?
উত্তর: বনফুলের প্রকৃত নাম বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়।

৯। বাড়ির পাশে নিমগাছ গজালে কারা খুশি হয়?
উত্তর: বাড়ির পাশে নিমগাছ গজালে বিজ্ঞরা খুশি হন।

১০। ‘বনফুল’ কার ছদ্মনাম?
উত্তর: ‘বনফুল’ বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম।

১১। নিমগাছের প্রশংসা করে কে?
উত্তর: নিমগাছের প্রশংসা করে কবি।

১২। ‘নিমগাছ’ গল্পটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
উত্তর: ‘নিমগাছ’ গল্পটি ‘অদৃশ্যলোক’ গ্রন্থ থেকে সংকলিত।

১৩। নিমগাছটির কার সাথে চলে যেতে ইচ্ছে করল?
উত্তর: নিমগাছটির লোকটার সাথে চলে যেতে ইচ্ছে করল।

১৪। ‘মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল নিমগাছের দিকে’- কে?
উত্তর: একজন নতুন ধরনের লোক বা কবি।

১৫। ‘কবিরাজ’ কাকে বলা হয়?
উত্তর: যিনি গাছগাছালি পরিশোধন করে মানুষের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করেন তাকে কবিরাজ বলা হয়।

১৬। ‘বিদ্যাসাগর’ জীবনী নাটকটি কার অনন্যসাধারণ সৃষ্টি?
উত্তর: ‘বিদ্যাসাগর’ জীবনী নাটকটি বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় (বনফুল)-এর অনন্যসাধারণ সৃষ্টি।

১৭। ‘নিমগাছ’ গল্পের ম্যাজিক-বাক্যটি কী?
উত্তর: ‘নিমগাছ’ গল্পের ম্যাজিক বাক্যটি হলো- “ওদের বাড়ির গৃহকর্ম-নিপুণা লক্ষ্মী বউটার ঠিক এক দশা।”

১৮। বনফুল কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: বনফুল ১৮৯৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯। কোন পদে বনফুলের কর্মজীবন শুরু হয়?
উত্তর: মেডিক্যাল অফিসার পদে বনফুলের কর্মজীবন শুরু হয়।

২০। বনফুলের গল্প ও উপন্যাসে কোনটি নিপুণভাবে প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তর: বাস্তব জীবন ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিচিত্র উপাদান।

২১। কত সালে বনফুল মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৯৭৯ সালে বনফুল মৃত্যুবরণ করেন।

২২। বনফুলের ‘নিমগাছ’ গল্পটি কী ধরনের রচনা?
উত্তর: বনফুলের ‘নিমগাছ’ গল্পটি প্রতীকী রচনা।

২৩। নিমগাছের কী ইচ্ছা করতে লাগল?
উত্তর: নিমগাছের কবি লোকটার সঙ্গে চলে যেতে ইচ্ছা করতে লাগল।

২৪। কেউ ছালটা ছড়িয়ে নিয়ে কী করছে?
উত্তর: কেউ ছালটা ছড়িয়ে নিয়ে সিদ্ধ করছে।

২৫। পাতাগুলো ছিঁড়ে কী করছে?
উত্তর: পাতাগুলো ছিঁড়ে শিলে পিষছে।

২৬। নিমগাছের কোন অংশ গরম তেলে ভাজা হয়?
উত্তর: নিমগাছের পাতা গরম তেলে ভাজা হয়।

২৭। নিমপাতা কিসের সঙ্গে রান্না করা হয়?
উত্তর: নিমপাতা বেগুনের সঙ্গে রান্না করা হয়।

২৮। নিমগাছের কচি ডাল ভেঙে লোকজন কী করে?
উত্তর: নিমগাছের কচি ডাল ভেঙে লোকজন চিবায়।

২৯। কী করলে দাঁত ভালো থাকে?
উত্তর: নিমগাছের কচি ডাল চিবালে দাঁত ভালো থাকে।

৩০। কবিরাজরা কার প্রশংসায় পঞ্চমুখ?
উত্তর: কবিরাজরা নিমগাছের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

৩১। ‘নিমগাছ’ গল্পে হঠাৎ একদিন কে এলো?
উত্তর: একজন নতুন ধরনের লোক।

৩২। নিমগাছে কেমন ফুল ধরে?
উত্তর: নিমগাছে থোকা থোকা ফুল ধরে।

৩৩। নিমগাছের থোকা থোকা ফুলকে কেমন লাগে?
উত্তর: নিমগাছের ফুলকে একঝাঁক নক্ষত্রের মতো লাগে।

নিমগাছ গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন

১। ‘একঝাঁক নক্ষত্র নেমে এসেছে যেন নীল আকাশ থেকে সবুজ সায়রে’- বুঝিয়ে লেখ। [ঢা. বো, ‘২৪]
উত্তর: “একঝাঁক নক্ষত্র নেমে এসেছে যেন নীল আকাশ থেকে সবুজ সায়রে।”- এখানে ‘একঝাঁক নক্ষত্র’ বলতে নিমফুলের সৌন্দর্যকে বোঝানো হয়েছে।
নিমগাছে ছোট ছোট সাদা ফুল একসাথে ঝরে থাকে। নিমগাছের মাথায় সাদা ফুলের থোকা জমে থাকে। ফুলের সুগন্ধে চারপাশ ভরে যায়। নিমপাতা সবুজ। যেমন রাতের আকাশে নক্ষত্র জ্বলজ্বল করে, দূর থেকে ফুলে ভরা নিমগাছ দেখলেও ঠিক তেমন নক্ষত্রের মতো মনে হয়। আলোচ্য লাইনে ‘একঝাঁক নক্ষত্র’ বলতে এটিকেই বোঝানো হয়েছে।

২। “সে আর-এক আবর্জনা” বলতে কী বোঝানো হয়েছে? [ম. বো, ‘২৪]
উত্তর: “সে আর-এক আবর্জনা” বলতে নিমগাছকে শান দিয়ে বাঁধিয়ে উটকো ঝামেলা তৈরির বিষয়কে বোঝানো হয়েছে।
নিমগাছ মানুষ ও পরিবেশের জন্য ভালো। কেউ বাড়িতে এই গাছ জন্মালে তা কেটে ফেলে না, আবার এর যত্নও ঠিকমতো করে না। তাই গাছের চারপাশে আবর্জনা জমে যায়। কেউ কেউ নিমগাছের গুরুত্ব বুঝে তার চারপাশে ইট ও সিমেন্ট দিয়ে বেড়া বানায়। কিন্তু এই বেড়া বানানো কাজ বেশ ঝামেলার মতো মনে হয়। প্রশ্নোক্ত কথায় এটাই বোঝানো হয়েছে।

৩। কবিরাজরা নিমগাছের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেন? বুঝিয়ে লেখ। [চ. বো. ‘২০; সি, বো, ‘২৩]
উত্তর: ঔষধি গুণের কারণে কবিরাজরা নিমগাছের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
নিমগাছ ঔষধি গাছ। এর পাতা চর্মরোগে খুব কার্যকর। খোস-পাঁচড়া, দাদ, হাজা, চুলকানিতে নিমপাতা ও ছাল খুব উপকারী। নিমের কচি পাতা যকৃতের জন্য ভালো। কচি ডাল চিবালে দাঁতও মজবুত হয়। এ কারণে কবিরাজরা নিমগাছের খুব প্রশংসা করে।

৪। নিমগাছটি কেন নতুন লোকটির সাথে চলে যেতে চাইল? বুঝিয়ে লেখ। [ঢা. বো ‘২০]
উত্তর: অনাদর ও অবহেলা থেকে মুক্তি পেতে কবির মতো একজন সৌন্দর্যপিয়াসী লোকের প্রশংসায় মুগ্ধ হয়ে নিমগাছটি তার সঙ্গে চলে যেতে চাইল।
‘নিমগাছ’ গল্পে সাধারণ অর্থে নিমগাছ হলো ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি গাছ। এর ছাল, পাতা, ডাল নানা ধরনের রোগে উপকার দেয়। তবু কেউ এ গাছের সামান্য যত্নও নেয় না। একদিন একজন কবি নিমগাছের রূপ ও গুণের প্রশংসা করেন। তার প্রশংসায় নিমগাছ মুগ্ধ হয়ে যায় এবং কবির সঙ্গে যেতে চায়। নিমগাছের এ ইচ্ছার মাধ্যমে লেখক একজন গৃহকর্ম-নিপুণ গৃহবধূর নিগৃহীত ও অবহেলিত জীবনের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।

৫। নতুন লোকটা মুগ্ধ দৃষ্টিতে নিমগাছের দিকে চেয়ে রইল কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: নতুন লোকটি সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে নিমগাছের দিকে চেয়ে রইল।
‘নিমগাছ’ গল্পে নতুন লোকটি একজন কবি। তার কাছে প্রয়োজনের চেয়ে সৌন্দর্যই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অন্যরা নিমগাছকে প্রয়োজনের দিক থেকে দেখলেও কবি তাকে শৈল্পিক দৃষ্টিতে অবলোকন করেছেন। নিমগাছের সবুজ পাতা আর থোকা থোকা সাদা ফুল তাকে মুগ্ধ করেছে। ফুলগুলো তাকে একঝাঁক নক্ষত্রের মতো মনে হয়েছে। তাই কবি মুগ্ধ দৃষ্টিতে নিমগাছের দিকে তাকিয়ে রইল।

৬। ‘শান দিয়ে বাঁধিয়ে দেয় কেউ- সে আর এক আবর্জনা। ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: শান দিয়ে বাঁধিয়ে দেয় কেউ- সে আর এক আবর্জনা।-নিমগাছের উপকারী দিক চিন্তা করে কেউ কেউ এটির চারপাশ শান দিয়ে বাঁধিয়ে দেয়, যা পরবর্তীতে উটকো ঝামেলা হিসেবেই পরিগণিত হয়।
নিমগাছ সব ধরনের রোগের জন্য উপকারী, তাই সবাই এটি মেনে নেয়। কেউ যত্ন না নিলেও এটি স্বাভাবিকভাবে বড় হয়। শুধু কাজে লাগার কারণে কিছু মানুষ গাছের গোড়ায় শান দিয়ে বাঁধে। কিন্তু সাধারণভাবে কেউ এর যত্ন করে না। কেউ আবার এর চারপাশ ময়লার ভাগাড় বানিয়ে ফেলে। এতে নিমগাছের প্রতি মানুষের অবহেলা প্রকাশ পায়।

৭। নিমগাছকে চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ বলা হয় কেন?
উত্তর: নিমগাছকে চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ বলা হয় নিমগাছ চর্মরোগের প্রতিকারের জন্য অদ্বিতীয় এবং কার্যকর উপাদান বলে।
আমাদের চারপাশে থাকা নিমগাছ একটি খুব দরকারী ঔষধি গাছ। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ এটি নানা রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধে ব্যবহার করে আসছে। খোস-পাঁচড়া, দাদ, হাজা, চুলকানি দূর করতে এই গাছের কোনো তুলনা নেই। বিশেষ করে চর্মরোগের জন্য এটি খুব উপকারী। তাই নিমগাছকে চর্মরোগের জন্য এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী ঔষধ বলা হয়।

৮। ‘কবিরাজ নয়, কবি।’- কথাটি বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: কবিরাজের কাছে কোনো জিনিসের প্রয়োগটাই মুখ্য আর কবির কাছে সৌন্দর্য। প্রশ্নোক্ত কথাটিতে এ বিষয়টিই ফুটে উঠেছে।
নিমগাছ দেখে একজন কবিরাজ খুশি হন কারণ এটি ঔষধি গুণসম্পন্ন। নিমগাছের পাতা, ছাল, ডাল নানা রোগ সারাতে ব্যবহার করা হয়। আর একজন কবি নিমগাছের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন। তাঁর চোখে নিমগাছের সবুজ পাতা ও থোকা থোকা সাদা ফুল অপার সৌন্দর্য প্রকাশ করে। এখানেই কবি ও কবিরাজের পার্থক্য দেখা যায়।

৯। “নিমগাছটির ইচ্ছে করতে লাগল লোকটার সঙ্গে চলে যেতে”- কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: অনাদর ও অবহেলা থেকে মুক্তি পেতে কবির মতো একজন সৌন্দর্যপিয়াসী লোকের প্রশংসায় মুগ্ধ হয়ে নিমগাছটির তার সঙ্গে চলে যেতে ইচ্ছে করে।
‘নিমগাছ’ গল্পে সাধারণ অর্থে নিমগাছ হল ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি গাছ। এর ছাল, পাতা, ডাল বিভিন্নভাবে মানুষের রোগ সারায়। কিন্তু কেউ খুব সামান্য যত্নও নেয় না। একদিন একজন কবি নিমগাছের রূপ ও গুণের প্রশংসা করেন। কবির এই প্রশংসায় নিমগাছ মুগ্ধ হয় এবং তার সঙ্গে চলে যেতে চায়। নিমগাছের এই ইচ্ছে প্রকাশের মাধ্যমে লেখক দেখিয়েছেন, একজন গৃহকর্ম-নিপুণা গৃহবধূর নিগৃহীত ও অবহেলিত জীবনের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা।

১০। ওদের বাড়ির গৃহকর্ম-নিপুণা লক্ষ্মীবউটার ঠিক এক দশা’- উক্তিটি ব্যাখ্যা কর ৷
উত্তর: উক্তিটিতে গৃহকর্ম-নিপুণা লক্ষ্মীবউকে অবহেলিত নিমগাছের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
নিমগাছ একটি খুব উপকারী গাছ। মানুষ প্রয়োজন অনুযায়ী এর প্রায় সব অংশ ব্যবহার করে। গল্পে নিমগাছের রূপ দিয়ে মূলত একজন গৃহকর্ম-নিপুণা গৃহবধূর জীবন চিত্র দেখানো হয়েছে। সে পরিবারের জন্য সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে, নিজের ইচ্ছা ও আনন্দ ত্যাগ করে। কিন্তু এর বিনিময়ে সে কিছুই পায় না। নিমগাছের মতোই তার জীবন অবহেলায় কেটে যায়।

১১। ‘কাটে না, কিন্তু যত্নও করে না’- ব্যাখ্যা কর ৷
উত্তর: ঔষধি গুণসম্পন্ন নিমগাছ যত্ন না করলেও বেড়ে ওঠে। এ কারণে নিমগাছটি না কাটলেও কেউ তার যত্ন করে না।
‘নিমগাছ’ বনফুলের একটি প্রতীকী গল্প। গল্পে সাধারণ অর্থে নিমগাছের ঔষধি গুণ ও উপকারিতা দেখানো হয়েছে। নিমগাছের ছাল, পাতা ও নিমফল থেকে তেল তৈরি হয়, যা নানা ওষুধ, কৃমিনাশক ও প্রসাধনীতে ব্যবহৃত হয়। ঔষধি গুণ থাকায় কেউ এটি কাটে না। তবে কেউ এ গাছের যত্নও করে না, কারণ যত্ন না করলেও গাছটি নিজে নিজে বেড়ে যায়। তাই এ গাছের জন্য আলাদা যত্ন নেওয়ায় কেউ আগ্রহ দেখায় না।

১২। বনফুল রচিত ‘নিমগাছ’ গল্পে “মাটির ভিতরে শিকড় অনেক দূরে চলে গেছে।”- বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তর: সাধারণভাবে নিমগাছের শিকড় মাটির গভীরে প্রবেশ করা এবং বিস্তৃত হওয়া বোঝালেও এ ক্ষেত্রে প্রতীকী অর্থে মানুষের প্রাতাহিক প্রয়োজনের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
নিমগাছ একটি ঔষধি গাছ। এ গাছের অনেক গুণ ও উপকারিতা আছে। কিন্তু কেউ এ গাছের যত্ন নেয় না। একদিন এক ব্যক্তি এসে শুধু তাকিয়ে রইল এবং নিমের ফুলগুলোকে এক ঝাঁক নক্ষত্রের সঙ্গে তুলনা করল। তাঁর প্রশংসায় মুগ্ধ নিমগাছও তার সঙ্গে চলে যেতে চাইল। কিন্তু যেতে পারল না। এখানে নিমগাছের প্রতীকী অর্থে বোঝানো হয়েছে গৃহকর্ম-নিপুণা লক্ষ্মীবউটির সংসারের দৈনন্দিন কাজ, দায়িত্ব এবং মায়া। মাটির নিচে গাছের শিকড় যেমন দূরে বিস্তৃত, তেমনই বিস্তৃত গৃহবধূর কাজের পরিধি ও মমত্ববোধ। সংসারের বেড়াজালে আবদ্ধ গৃহবধূর দায়িত্ব ও কর্তব্যও অনেক। এভাবেই এই কথার মাধ্যমে সেটি বোঝানো হয়েছে।

Related Posts

Leave a Comment