দুর্নীতি হলো সমাজ ও জাতীয় জীবনের একটি ক্যান্সারের মতো, যা ধীরে ধীরে দেশের মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার ও উন্নতির পথকে ধ্বংস করে দেয়। এই পোস্টে দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপ ভাব সম্প্রসারণ লিখে দিলাম।
দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপ ভাব সম্প্রসারণ
ভাব-সম্প্রসারণঃ দুর্নীতি একটি ভয়ঙ্কর সামাজিক ব্যাধি যা দেশের উন্নতি ও শান্তি নষ্ট করে দেয়। এটি শুধু টাকা-পয়সার অপচয়ই নয়, বরং সমাজের ন্যায়বিচার ও নৈতিকতাকেও ধ্বংস করে। দুর্নীতিবাজরা সরকারি অর্থ চুরি করে, সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নেয় এবং ভালো কাজে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রাস্তাঘাটের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো ঠিকমতো উন্নতি করতে পারে না। দুর্নীতির কারণে সৎ ও যোগ্য লোকেরা পিছিয়ে পড়ে, আর অসৎ লোকেরা সুযোগ-সুবিধা পেয়ে যায়। এতে সমাজে অবিচার বাড়ে, গরিবরা আরও গরিব হয় এবং দেশে অশান্তি সৃষ্টি হয়। দুর্নীতি গণতন্ত্রকে দুর্বল করে, মানুষ সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর আস্থা হারায়। অনেক দুর্নীতিবাজ আইনের ফাঁক খুঁজে বেড়ায়, যার ফলে অন্যায় জিনিসও আইনসম্মত হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে সচেতন হতে হবে, স্বচ্ছভাবে কাজ করতে হবে এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। স্কুল-কলেজে নৈতিক শিক্ষা বাড়ানো, সরকারি কাজে স্বচ্ছতা আনা এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা জরুরি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এটা আমাদের সবার দায়িত্ব। কারণ দুর্নীতি শুধু আজকের সমস্যা নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনও নষ্ট করছে। সৎ ও নিষ্ঠাবান নাগরিক হিসাবে আমাদেরই দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে, তবেই দেশ প্রকৃত উন্নতি করতে পারবে।
দুর্নীতি জাতির সকল উন্নতির অন্তরায় ভাব সম্প্রসারণ
ভাব-সম্প্রসারণঃ দুর্নীতি একটি দেশের জন্য সবচেয়ে বড় শত্রু, যা ধীরে ধীরে দেশকে খেয়ে ফেলে। যখন কেউ ঘুষ নেয় বা দেয়, সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে, তখন সাধারণ মানুষের কষ্টই বাড়ে। স্কুল-হাসপাতাল তৈরি হয় না ঠিকমতো, রাস্তাঘাট ভেঙে থাকে, আর গরিব মানুষ আরও গরিব হয়। দেখা যায়, যোগ্য ছাত্র চাকরি পায় না, কিন্তু ঘুষ দিয়ে অযোগ্য ব্যক্তি চাকরি পেয়ে যায়। এতে দেশের ক্ষতি হয়, ভালো মানুষ হতাশ হয়। দুর্নীতির কারণে দাম বাড়ে, টাকার মান কমে, ব্যবসা-বাণিজ্য ঠিকমতো চলে না। সরকারি অফিসে কাজ পেতে গেলে ঘুষ দিতে হয়, ন্যায্য অধিকার পেতেও লোকসান গুনতে হয়। ছোটবেলা থেকেই শিশুরা যখন দেখে বাবা-মা বা আত্মীয়স্বজন দুর্নীতি করছে, তখন তারাও ভাবে এটাই স্বাভাবিক। এভাবে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম শেখে কিভাবে অন্যায় করা যায়। দুর্নীতিবাজরা বড় বড় বাড়ি গাড়ি করে, কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবন কষ্টেই থেকে যায়। দেশের উন্নতি হয় না, বিদেশিরা আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতে ভয় পায়। রাজনীতিবিদরা যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, তাহলে দেশ চালায় কারা? পুলিশ, বিচারক, আমলা সবাই যদি ঘুষ নেয়, তাহলে গরিব মানুষের ন্যায় কোথায় পাবে? দুর্নীতির কারণে ভালো ভালো প্রকল্প নষ্ট হয়, টাকা চলে যায় অন্য খাতে। যারা সৎভাবে চেষ্টা করে, তারা পিছিয়ে পড়ে, আর অসৎরা এগিয়ে যায়। এটা কোনো ধর্ম বা সমাজ সমর্থন করে না, কিন্তু সবাই চুপ করে দেখে। দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে সবার আগে আমাদের নিজেদের পরিবার থেকে শুরু করতে হবে। ছোটবেলা থেকেই শিশুদের সততা শেখাতে হবে। সরকারি অফিসে স্বচ্ছতা আনতে হবে, কাজের জন্য ঘুষ নেওয়া বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষকে দুর্নীতিবাজদের নাম প্রকাশ করতে হবে। আইনকে শক্তিশালী করতে হবে, যাতে দুর্নীতিবাজরা শাস্তি পায়। স্কুল-কলেজে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম সৎভাবে বাঁচতে শেখে। দুর্নীতি বন্ধ হলে দেশ দ্রুত উন্নতি করবে, সবাই সুখে থাকবে। আসুন, আমরা সবাই মিলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই, একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ি।