তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর -একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা

সুফিয়া কামালের “তাহারেই পড়ে মনে” কবিতাটি একটি মনস্তাত্ত্বিক অনুভূতির গভীর ছবি, যেখানে প্রকৃতি এবং ব্যক্তিগত দুঃখের দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই পোস্টে তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর -একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা দিলাম।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

১. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটিকে নাটকীয় গুণসম্পন্ন বলা হয় কেন?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটিকে নাটকীয় বলা হয় কারণ এটি মূলত সংলাপনির্ভর। কবিতায় কবি এবং তাঁর এক ভক্তের মধ্যে কথোপকথন রয়েছে। কবি যখন নিজের শোক ও নিঃসঙ্গতা প্রকাশ করছেন, তখন ভক্ত একের পর এক প্রশ্ন করেন, আর কবি ধীরে ধীরে নিজের অনুভূতির জবাব দেন। এই সংলাপভিত্তিক গঠনই কবিতাটিকে নাটকের মতো প্রাণবন্ত করে তুলেছে, যেখানে চরিত্রের কথোপকথনই মূল আকর্ষণ এবং বিষয়বস্তুকে দৃঢ়ভাবে ফুটিয়ে তোলে।

২. “পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে” বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
‘পুষ্পশূন্য দিগন্তের পথে’ বলতে কবি এক ধরনের নিঃসঙ্গ ও নিরানন্দ পথের কথা বোঝাতে চেয়েছেন। শীতকালে প্রকৃতি যেমন রিক্ত ও নীরস হয়ে পড়ে, তেমনি কবির মনও শোক এবং স্মৃতির ভারে ভারাক্রান্ত। শীতের রিক্ততাকে কবি তার প্রিয়জনের অভাবের সাথে তুলনা করেছেন, যে নীরবতায় তাঁর জীবনের বসন্তও যেন হারিয়ে গেছে।

৩. ‘কুহেলি উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যাসী’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
এখানে ‘মাঘের সন্ন্যাসী’ বলতে কবি শীতকালকেই নির্দেশ করেছেন, তবে তা কেবল ঋতুর পরিবর্তন নয়—কবির প্রিয়জনের চলে যাওয়াকে বুঝিয়েছেন। শীতের নিঃস্বভাবকে কবি তাঁর প্রিয়জনের মহাপ্রস্থানের প্রতীক হিসেবে দেখেছেন, যে ধীরে ধীরে সব কিছু ছেড়ে নিঃশব্দে দূরে সরে যায়। প্রকৃতির এই রিক্ততা তাঁর একাকীত্ব ও শূন্যতাকে তুলে ধরেছে।

৪. বসন্তের আগমন সত্ত্বেও কবি নীরব ভূমিকা পালন করছেন কেন?
কবির জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটি আর পৃথিবীতে নেই। বসন্ত এলেও তাঁর মন রিক্ত এবং শূন্যতায় পূর্ণ। কবির মন বসন্তকে বরন করতে প্রস্তুত নয় কারণ যে মানুষটি কবির জীবনের আনন্দের প্রতীক ছিল, সে চলে গেছে। তাই বসন্ত এলেও কবির মনের ক্যানভাসে সেই শীতল, বিষণ্ণ শীতেরই রেশ রয়ে গেছে।

৫. ‘কুহেলি উত্তরী তলে মাঘের সন্ন্যাসী’—এর তাৎপর্য কী?
এই পঙ্ক্তিতে কবি শীতের সন্ন্যাসীর মতো রিক্ত ও নিরাসক্ত রূপকে তুলে ধরেছেন, যেখানে শীত যেন সর্বস্বান্ত হয়ে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে যায়। কবির ব্যক্তিগত শোক এবং প্রিয়জন হারানোর বেদনা এখানে প্রকৃতির মাধ্যমে ব্যক্ত হয়েছে। শীতের এ রিক্ততা কবির মনোভাবের সঙ্গে মিলে গিয়ে তাঁর অন্তরের শূন্যতাকে প্রতিফলিত করেছে।

৬. “যদিও এসেছে তবু তুমি তারে করিলে বৃথাই”-এর অর্থ কী?
এখানে কবি একটি গভীর অভিমান প্রকাশ করেছেন। বসন্ত এলেও তিনি তা বরণ করতে পারেননি, কারণ তাঁর প্রিয় মানুষটি নেই। প্রতি বসন্তেই কবি আনন্দে বসন্তকে বরণ করতেন, কিন্তু এবার তাঁর হৃদয় শূন্যতায় আচ্ছন্ন, ফলে বসন্তের আগমন তাঁকে আনন্দ দেয়নি। প্রকৃতিতে বসন্তের আবেদন থেকেও তাই তা যেন বৃথা হয়ে গেল।

৭. ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় প্রকৃতির কোন রূপ চিত্রিত হয়েছে?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় বসন্তের সৌন্দর্যের অপূর্ব বর্ণনা রয়েছে। গাছের নতুন পাতা, ফুলের মধুর সুবাস এবং দখিনা বাতাসের মৃদু পরশে প্রকৃতি যেন নিজেকে নতুন করে সাজিয়েছে। ফুলে ভরে উঠেছে বনভূমি, আম্র-মুকুলের সুগন্ধে মৌ-মধুতে মুখরিত পরিবেশে প্রকৃতি বসন্তের আগমনী বার্তা ঘোষণা করছে। তবে, কবির মনে এই সৌন্দর্যের আবেদন নেই, কারণ তাঁর প্রিয়জন নেই।

৮. বসন্তের আগমনেও কবির পুষ্পসাজ নেই কেন?
বসন্ত এলেও কবির মন শোকের আবরণে আচ্ছন্ন। বসন্তের আনন্দ ও রঙিন সাজ তাঁর কাছে অর্থহীন মনে হয়। যে মানুষটি তাঁর বসন্তের মূল উৎস ছিল, তার অনুপস্থিতি কবির জীবনকে শূন্য এবং রিক্ত করে তুলেছে। কবির মনে বসন্তের আগমনী রং নেই কারণ তাঁর প্রিয়জনের বিদায় তাঁকে গভীর শূন্যতায় ডুবিয়ে রেখেছে, ফলে তাঁর মনে বসন্তের কোনো উচ্ছ্বাস নেই।

৯। কবি অভিমান করেছেন কি-না এ প্রশ্ন করার কারণ কী?
কবি বসন্ত নিয়ে কোনো কবিতা লিখছেন না—এ কারণেই তাকে এ প্রশ্নটা করা হয়েছে। ঋতুরাজ বসন্ত এসেছে, কিন্তু কবি স্বভাবসিদ্ধ সেই উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছেন না; পুষ্পসজ্জা নেই, বসন্ত বন্দনায় কোনো গান নেই। যখন তাকে বসন্তের প্রতি এই উদাসীনতার কারণ জিজ্ঞেস করা হলো, কবি বললেন, বসন্ত তো তার বন্দনাগীতির অপেক্ষায় বসে নেই। তিনি বন্দনাগীত না লিখলেও বসন্ত ঠিকই গাছে গাছে ফুল ফুটিয়ে, বাতাসে ফুলের গন্ধ ছড়িয়ে এসেছে। কবিমনের দুঃখ বা নিঃসঙ্গতার জন্য বসন্ত তার আগমনে কোনো বিলম্ব করেনি। বসন্তকে নিয়ে কবি অভিমান করেছেন কি না, সে কারণেই এই প্রশ্ন।

১০। কবি কাকে কেন মাঘের সন্ন্যাসী বলেছেন?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় সুফিয়া কামাল শীত ঋতুকে ‘মাঘের সন্ন্যাসী’ বলেছেন। এই দেশে পৌষ-মাঘ শীতের মাস, আর মাঘের শেষে প্রকৃতিতে শীত যেন শেষের সন্ন্যাসীর মতোই আসে—সবুজ পাতার আস্তরণ উড়ে যায়, গাছগুলো শূন্য ও রিক্ত হয়ে পড়ে। একেবারে যেন সংসার ত্যাগী সন্ন্যাসীর মতো, যার জীবনে নেই কোনো অলংকার বা জৌলুস। প্রকৃতির এই অবস্থা দেখে কবি শীতকে ‘মাঘের সন্ন্যাসী’ বলেই তুলনা করেছেন।

১১। ‘অর্ঘ্য বিরচন’ কথাটি দ্বারা কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
“অর্ঘ্য” অর্থ উপহার বা অঞ্জলি, আর “বিরচন” মানে সৃজন বা রচনা। কবি বলতে চেয়েছেন, প্রকৃতি তার রঙিন সাজ, ফুল আর সৌরভ দিয়ে বসন্তকে বরণ করে নেয়। কেউ তা স্মরণ করুক বা না করুক, বসন্তকে বরণ করার জন্য প্রকৃতির এই ‘অর্ঘ্য বিরচন’ চলতেই থাকে।

১২। “হে কবি, নীরব কেন?” এখানে কবি ‘নীরব কেন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতার শুরুতেই কবির ভক্তরা প্রশ্ন করছেন, “হে কবি, নীরব কেন, ফাগুন যে এসেছে ধরায়।” এখানে কবির নীরবতা আসলে উদাসীনতার ইঙ্গিত বহন করছে। কেন কবি বসন্ত এসেছে জেনেও কবিতা লিখছেন না, সে প্রশ্নটিই এখানে ফুটে উঠেছে।

১৩। ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবির কার কথা মনে পড়ে? কেন?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি তাঁর প্রয়াত স্বামী সৈয়দ নেহাল হোসেনের কথা মনে করছেন। প্রথম স্বামীর মৃত্যু কবির মনে এক বিশাল শূন্যতা এনে দেয়। তাঁর প্রিয়জনের এই চলে যাওয়া কবির মনকে বিষণ্ণ করেছে, তাই তিনি তাকে স্মরণ করছেন।

১৪। ‘মাঘের সন্ন্যাসী’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি শীত ঋতুকে ‘মাঘের সন্ন্যাসী’ বলেছেন। শীতের শেষে, যখন প্রকৃতি রিক্ত হয়ে যায়, তখন তাকে একেবারে সংসার ত্যাগী, ধন-সম্পদহীন সন্ন্যাসীর মতোই মনে হয়। এই নিঃসঙ্গ, নিরাভরণ চেহারা দেখেই কবি শীতকে ‘মাঘের সন্ন্যাসী’ বলে তুলনা করেছেন।

১৫। বসন্ত এলেও কবিমনে শীতের রিক্ততা কেন?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি তার প্রিয় মানুষকে হারিয়ে বেদনাবিধুর। শীতের শেষে বসন্ত এলেও সেই হারানোর যন্ত্রণা তাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। চারদিকে বসন্তের রঙ, ফুলের সৌন্দর্য তাকে স্পর্শ করতে পারছে না। প্রিয় মানুষটির স্মৃতি কবির মনে এক গভীর শীতের রিক্ততা এনে দিয়েছে, যা বসন্তের আগমনে দূর হয়নি।

১৬। ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতায় কবি বসন্ত ঋতুর বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেন কেন?
কবির মন প্রকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ। শীতের রিক্ততার পরে বসন্ত আসে তার সব সৌন্দর্য নিয়ে, ফুলে ফুলে ভরে যায় চারদিক। বাতাসে ফুলের গন্ধ, পাখিদের গান—সব মিলে প্রকৃতির এক অপরূপ রূপ। প্রকৃতিপ্রেমী সুফিয়া কামাল এই সৌন্দর্যের মুগ্ধতা থেকেই বসন্তের বৈশিষ্ট্য কবিতায় তুলে ধরেছেন।

তাহারেই পড়ে মনে কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন

১৭। কবিকে কেন বসন্ত বন্দনা করার অনুরোধ করা হয়েছে?
কবিকে বসন্ত বন্দনা করার অনুরোধ করার কারণ হলো, বসন্তে তার কবিতাগুলোতে যে আনন্দমুখর সৌন্দর্য ফুটে ওঠে, তাতে বসন্ত যেন আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। বসন্ত এলেই কবি প্রকৃতির রূপ-সৌন্দর্য নিয়ে কবিতা লিখতেন, যার মাধ্যমে বসন্ত যেন পূর্ণতা পায়। কিন্তু এবার কবি তার কলমে কোনো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন না। তাই কবিভক্তরা কবির কাছে অনুরোধ করেছেন, যেন তিনি বসন্ত বন্দনায় মন দেন, যাতে কবির ভাষায় বসন্তের সেই পূর্ণ আনন্দের ছোঁয়া পাওয়া যায়।

১৮। ‘এসেছে তা ফাগুন স্মরিয়া’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
“এসেছে তা ফাগুন স্মরিয়া” বলতে বোঝানো হয়েছে যে, কবি বসন্ত নিয়ে কিছু না লিখলেও, বসন্ত ঠিকই তার নির্দিষ্ট সময়ে এসেছে। কবি এবার বসন্তকে বরণ করতে কোনো বন্দনা গান লেখেননি, কিন্তু তাতেও ফাল্গুনের আগমনে কোনো বাধা হয়নি। কবির অভিমানে প্রকৃতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি; বসন্ত তার রীতিমতো ঠিকই প্রকৃতিকে সাজিয়েছে।

১৯। ‘তাহারেই পড়ে মনে’ কেন নাটকীয় গুণসম্পন্ন কবিতা?
‘তাহারেই পড়ে মনে’ কবিতাটি একটি সংলাপ নির্ভর গঠনে তৈরি, যেখানে কবি ও তার ভক্তদের কথোপকথনের মাধ্যমে বিষয়টি এগিয়ে চলে। নাটকের মতোই এখানে চরিত্রগুলো একে অপরের সঙ্গে কথোপকথনে জড়ায়, যা কবিতায় নাটকীয়তা তৈরি করে। এই কবিতায় কবি ও কবিভক্তের কথোপকথন ধীরে ধীরে মূল ঘটনা প্রকাশ করে, ঠিক নাটকের মতোই কাহিনির মোড় নেয়। এই কারণেই কবিতাটি নাটকীয় গুণসম্পন্ন।

২০। ‘দক্ষিণ দুয়ার গেছে খুলি?’ কবি এ কথা কেন বলেছেন?
“দক্ষিণ দুয়ার গেছে খুলি?”—এই কথায় কবি বোঝাতে চেয়েছেন বসন্তের দখিনা বাতাস বইতে শুরু করেছে কিনা। বসন্ত এলেও কবি তা খেয়াল করেননি, তিনি এতটাই উদাসীন। প্রকৃতির এই পরিবর্তন তার মনে কোনো ছাপ ফেলেনি, কারণ তার মন তখন শোকে আচ্ছন্ন। কবিমন যদি কোনো কারণে ব্যথিত থাকে, তাহলে প্রকৃতির সব সৌন্দর্যও তার হৃদয় ছুঁতে পারে না।

২১। “দখিনা সমীর তার গন্ধে গন্ধে হয়েছে কি অধীর আকুল?”- এ কথা কেন বলা হয়েছে?
“দখিনা সমীর তার গন্ধে গন্ধে হয়েছে কি অধীর আকুল?” এই কথার মাধ্যমে কবি বসন্তের সৌন্দর্যের স্বাভাবিক পরিবর্তন জানতে চাইছেন। বসন্ত এলে বাতাসে ফুলের সুবাসে চারদিক ভরে ওঠে, কিন্তু কবি এবার তা অনুভব করতে পারছেন না। শীতের রিক্ততা কাটলেও কবির মনে সেই শূন্যতা রয়ে গেছে। তাই কবি জিজ্ঞেস করেছেন, বসন্তের সেই মনোহর গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে কিনা।

২২। কবিভক্ত কবির কাছে কী মিনতি করেছে?
কবিভক্তরা বসন্ত বন্দনা শোনার জন্য কবির কাছে মিনতি করছে। বসন্তের আগমনে প্রকৃতি সৌন্দর্যে ভরে উঠলেও কবির মন বিষাদে আচ্ছন্ন। তার প্রিয়জনকে হারানোর কারণে বসন্তের সেই আনন্দ কবিকে স্পর্শ করতে পারছে না। কবিভক্তরা তাই কবির কাছে বসন্ত নিয়ে তার কবিতার বন্দনা শোনার মিনতি করছেন, যেন কবির ভাষায় তারা বসন্তের সেই সজীবতার ছোঁয়া পান।

২৩। ‘পুষ্পশূন্য দিগন্ত’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
‘পুষ্পশূন্য দিগন্ত’ কথাটির মাধ্যমে কবি তার নিজের শূন্য হৃদয়কে প্রকৃতির রিক্ততার সঙ্গে তুলনা করেছেন। শীতের শেষে যেমন গাছগুলো পাতা আর ফুলশূন্য হয়ে পড়ে, তেমনি প্রিয়জনের মৃত্যু কবির জীবনকেও শূন্য করে দিয়েছে। শীতের মতোই কবির হৃদয়ে রিক্ততা এসেছে, যা বসন্তের সৌন্দর্যেও পূর্ণ হয়নি।

২৪। কবি বসন্ত আগমনের খবর রাখেন না কেন?
প্রিয়জনের বিচ্ছেদে কবি এতটাই বেদনাবিধুর হয়ে আছেন যে, প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও তিনি তা খেয়াল করেননি। বসন্তে চারপাশে প্রকৃতি সৌন্দর্যে পূর্ণ হয়, কিন্তু কবির জীবনে প্রিয়জন হারানোর শোকের ছায়া পড়ে রয়েছে। এই কারণেই তিনি বসন্তের আগমনের খবর রাখেননি।

২৫। ‘তরী তার এসেছে কি? বেজেছে কি আগমনী গান?’ – ব্যাখ্যা করুন।
এই কথাগুলো কবির শোকাতুর মনের প্রতিচ্ছবি। বসন্তের আগমনে প্রকৃতিতে আনন্দের সুর বাজলেও, কবির মন তা উপলব্ধি করতে পারছে না। কবি এতটাই শোকে আচ্ছন্ন যে, বসন্তের কোনো আনন্দ তাকে স্পর্শ করছে না। তার হৃদয়ে শীতের রিক্ততা আর প্রিয়জন হারানোর ব্যথা এমনভাবে ছায়া ফেলেছে যে বসন্তের আগমনী গান তার কাছে কোনো উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করতে পারছে না।

Related Posts

Leave a Comment