কাবুলিওয়ালা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “কাবুলিওয়ালা” গল্পে অনেকগুলো স্তর রয়েছে—এটা শুধুমাত্র কাবুলিওয়ালা এবং মিনির মধ্যে সম্পর্কের গল্প নয়, বরং তা মনের মধ্যে মানুষের প্রতি ভালোবাসা, সম্পর্কের পরিবর্তন, এবং সময়ের কাহিনীও তুলে ধরে। এই পোস্টে কাবুলিওয়ালা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর লিখে দিলাম।

Image with Link Descriptive Text

কাবুলিওয়ালা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন

১। কাবুলিওয়ালা বর্ণনা দাও

উত্তর: কাবুলিওয়ালা একজন আফগান ব্যবসায়ী, যার নাম রহমত। সে কলকাতায় আসে মেওয়া ও শুকনো ফল বিক্রি করতে। তার ঝুলিতে বিভিন্ন ধরনের ফল থাকে এবং তাকে দেখতে বেশ বিচিত্র লাগে, যা মিনির দৃষ্টি আকর্ষণ করে।


২। মিনির সঙ্গে প্রথম দেখা হলে রহমত কেমন আচারণ করেছিলেন?

উত্তর: মিনির সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার পর রহমত হাসি দিয়ে তাকে “খোখী” নামে ডাকত। সে মিনিকে বেশ ভালোবাসতে শুরু করে এবং তার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। মিনির কাছে তার খুব একটা ভালো জায়গা হয়ে ওঠে।


৩। মিনির মা কেন রহমত সম্পর্কে শঙ্কিত ছিলেন?

উত্তর: মিনির মা রহমতকে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন কারণ তিনি জানতেন না যে রহমত আসলে কে এবং তার আসল উদ্দেশ্য কী। তিনি তার কন্যার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন, বিশেষত যখন রহমত বাড়ির কাছাকাছি আসতেন।


৪। কাবুলিওয়ালার ঝুলিতে কী কী ছিল?

উত্তর: রহমতের ঝুলিতে ছিল নানা ধরনের শুকনো ফল, যেমন কিসমিস, বাদাম, খোবানি, এবং অন্যান্য মেওয়া। একসময় সে মিনিকে কিছু ফল দিয়ে তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে চেয়েছিল, কিন্তু মিনির প্রথম সময়ে তা গ্রহণ করতে কিছুটা ভয় ছিল।


৫। রহমত মিনিকে কেন “শ্বশুরবাড়ি” যাওয়ার কথা বলেছিল?

উত্তর: রহমত মিনিকে মজা করে “শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার” কথা বলেছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল মিনির সঙ্গে হাস্যরস সৃষ্টি করা, কারণ সে জানত যে মিনির বয়স কম এবং শ্বশুরবাড়ি শব্দটি তার কাছে অচেনা ও মজার বিষয়।


৬। কাবুলিওয়ালার সঙ্গে মিনির সম্পর্ক কীভাবে গড়ে উঠেছিল?

উত্তর: মিনির সঙ্গে কাবুলিওয়ালার সম্পর্ক খুবই ভালো ও বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। রহমত তাকে শুকনো ফল ও মেওয়া দিয়ে খুশি করতো, আর মিনিও তাকে আগ্রহের সঙ্গে প্রশ্ন করত। তাদের মধ্যে একটি সরল ও নিষ্পাপ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।


৭। রহমত কেন কারাবন্দী হয়েছিল?

উত্তর: রহমত একটি ছোট অশান্তি ঘটানোর জন্য কারাবন্দী হয়েছিল। সে তার এক প্রতিবেশীর কাছে কিছু ঋণ নিয়েছিল, কিন্তু সেই প্রতিবেশী সেই ঋণ অস্বীকার করেছিল। এক পর্যায়ে, এই বিতর্কের ফলে রহমত তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছিল, যার জন্য তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।


৮। রহমত মিনির জন্য কী নিয়ে এসেছিল?

উত্তর: রহমত মিনির জন্য কিছু আঙুর, বাদাম, এবং কিসমিস নিয়ে এসেছিল। সে এসব উপহার মিনির জন্য আনতে চেয়েছিল, কারণ তার নিজের দেশেও একটি মেয়ে ছিল এবং সে মিনিকে তার মেয়ের মতো ভালোবাসত।


৯। গল্পের শেষে রহমতের কি অবস্থা ছিল?

উত্তর: গল্পের শেষে রহমত একেবারে পরিবর্তিত হয়ে যায়। তার শরীরে আর আগের মতো শক্তি নেই, তার মধ্যে আগের তেজ নেই, এবং সে এক প্রকার নিঃসঙ্গ হয়ে যায়। তবে তার মন ছিল মিনির সঙ্গে তার স্মৃতিচিহ্নগুলো নিয়ে, যা তাকে জীবনে পরবর্তী সময়ে খুঁজে পাওয়া যাবে।


১০। কাবুলিওয়ালাকে প্রথমে দেখে মিনি কি ভেবেছিল?

উত্তর: কাবুলিওয়ালা মিনির মনে এক নতুন অনুভূতি সৃষ্টি করেছিল। তার অদ্ভুত পোশাক, ময়লা কাপড় এবং ঝুলি দেখে মিনির মধ্যে কৌতূহল জেগে ওঠে। প্রথমদিকে সে তাকে ভয় পেয়েছিল, তবে পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।


১১। কাবুলিওয়ালার সঙ্গে মিনি কি কথা বলত?

উত্তর: মিনির কথার মধ্যে এক ধরনের সরলতা ছিল, যেটা কাবুলিওয়ালার কাছে খুব আকর্ষণীয় ছিল। মিনির প্রশ্নগুলো ছিল মজার এবং সরল, আর রহমতও তার সাথে হাসি-ঠাট্টা করে বলত, বিশেষত “শ্বশুরবাড়ি” নিয়ে তার হাস্যকর প্রশ্নগুলো।


১২। মিনির মা কাবুলিওয়ালাকে কেন সন্দেহ করতেন?

উত্তর: মিনির মা কাবুলিওয়ালাকে সন্দেহ করতেন কারণ তিনি জানতেন না, রহমতের আসল উদ্দেশ্য কী। তার মধ্যে অজানা মানুষের প্রতি এক ধরনের শঙ্কা ছিল, এবং তিনি মিনির সুরক্ষার জন্য কাবুলিওয়ালার প্রতি বিশেষ নজর রাখতেন।


১৩। কাবুলিওয়ালা কেন মিনিকে “খোখী” বলে ডাকত?

উত্তর: কাবুলিওয়ালা মিনিকে “খোখী” বলে ডাকত, যেটি ছিল একটি আদুরে নাম। সে মিনির প্রতি তার ভালোবাসা এবং বন্ধুত্ব প্রকাশ করতে এই ডাকনাম ব্যবহার করত, যা মিনির কাছে এক ধরনের খুশি ও মজা ছিল।


Related Posts

Leave a Comment