কত কাল ধরে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা

আনিসুজ্জামানের ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধে বাংলাদেশের ইতিহাস আড়াই হাজার বছর বা তারও বেশি সময়ের পুরোনো। ইতিহাসে থাকে সব রকমের মানুষের জীবনযাত্রার পরিচয়। এই পোস্টে কত কাল ধরে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।

কত কাল ধরে সৃজনশীল প্রশ্ন

সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন]
শহরের মেয়ে দীপা তার নানাকে নিয়ে নানা বাড়ির গ্রাম দেখতে বের হয়। তার নানা প্রথমে তাকে একটা অবস্থাপন্ন পরিবারে নিয়ে যান। এ পরিবারে তার বয়সী মেয়েরা সালোয়ার-কামিজ পরে, ঠোঁটে লিপস্টিক দেয়, হাতে চুড়ি ও কানে স্বর্ণের দুল পরে। গৃহিণীরা তাঁতের শাড়ি পরে এবং শাড়ির আঁচল টেনে ঘোমটা দেয়। তাদের হাতে ও গলায় স্বর্ণালংকার শোভা পাচ্ছে। এ বাড়ি পেরিয়ে দীপা এক দিনমজুরের খড়ের তৈরি ঝুপড়ি ঘরে ঢুকে পড়ে। দিনমজুরের স্ত্রীর পরনে মলিন শাড়ি, সন্তানদের পরনে ছেঁড়া হাফপ্যান্ট এবং শরীরের রুগ্ম দশা দেখে দীপার খুব মনঃকষ্ট হয়। সে ভাবে, শত শত বছর চলে যায়, কিন্তু এদেশের দরিদ্র মানুষের জীবনের অভাবগুলো আর চলে যায় না।

ক. বাংলাদেশের ইতিহাস কত বছরের পুরোনো?

খ. ইতিহাস বলতে বোঝায় সব মানুষের কথা- ব্যাখ্যা কর।

গ. দীপার দেখা গ্রামের লোকজনের পোশাক-পরিচ্ছদের সাথে হাজার বছর আগের পূর্বপুরুষদের পোশাকের যে মিল পাওয়া যায় তা বর্ণনা কর।

ঘ. ‘শত শত বছর চলে যায়, কিন্তু এদেশের মানুষের জীবনের অভাবগুলো চলে যায় না।’- উদ্দীপক এবং ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ

ক. বাংলাদেশের ইতিহাস আড়াই হাজার বছর বা তারও বেশি পুরনো।

খ. আলোচ্য বাক্যে বোঝানো হয়েছে, ইতিহাসে থাকে সব রকম মানুষের জীবনযাত্রার পরিচয়।

এক সময় বাংলাদেশে রাজার শাসন ছিল না। তখন মানুষ নিজেরা মিলেমিশে কথা বলে ও পরামর্শ করে দেশ চালাত। এটা ইতিহাসের অনেক আগের সময়ের ঘটনা। প্রায় তেইশ-চব্বিশশো বছর আগে যখন রাজার শাসন শুরু হয়, তখন মানুষের জীবনধারা, রাজনীতি, অর্থনীতি এসব বিষয়ে ইতিহাস লেখা শুরু হয়। প্রশ্নে এই কথাগুলোই বলা হয়েছে।

গ. দীপার দেখা গ্রামের লোকজনের পোশাক-পরিচ্ছদের সাথে হাজার বছর আগের পূর্বপুরুষদের পোশাকের মিল পাওয়া যায়।

মানুষ যখন ধীরে ধীরে সভ্য হতে শুরু করে, তখন থেকেই লজ্জা ঢাকতে শিখে। এরপর ধীরে ধীরে মানুষ নানা ধরনের পোশাক ও গয়না ব্যবহার করতে থাকে। উদ্দীপকে দীপা দেখে, গ্রামের মেয়েরা সালোয়ার-কামিজ পরে, ঠোঁটে লিপস্টিক দেয়, হাতে চুড়ি পরে আর কানে স্বর্ণের দুল পরে। গৃহিণীরা তাঁতের শাড়ি পরে এবং আঁচল টেনে ঘোমটা দেয়। তাদের হাতে ও গলায় স্বর্ণের গয়না থাকে। ‘কত কাল ধরে’ রচনায় লেখক বলেন, এক হাজার বছর আগে সব পুরুষ ধুতি পরত, মেয়েরা শাড়ি পরত। তখনও মেয়েরা আঁচল দিয়ে ঘোমটা দিত। এই দুটি বর্ণনায় মিল পাওয়া যায়।

ঘ. “শত শত বছর চলে যায়, কিন্তু এদেশের মানুষের জীবনের অভাবগুলো চলে যায় না।” বিষয়টি উদ্দীপক ও ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের ক্ষেত্রে গভীর তাৎপর্যপূর্ণ ও যথার্থ।

উদ্দীপকে দীপা দিনমজুরদের যে জীবন দেখে, তা হলো—তাদের খড়ের তৈরি ছোট ঘর, দিনমজুরের স্ত্রীর গায়ে ময়লা শাড়ি, সন্তানদের ছেঁড়া হাফপ্যান্ট পরা এবং তাদের অসুস্থ-রোগা শরীর। ‘কত কাল ধরে’ রচনার লেখক মনে করেন, দিনমজুরদের এমন কষ্টের জন্য রাজা-বাদশাদের আসাও কিছুটা দায়ী। লেখক বলেন, রাজারা এদেশে এলে তাদের সঙ্গে মন্ত্রী-সামন্তরাও এলেন। তারপর থেকে ইতিহাসে শুধু রাজাদের নাম বড় করে লেখা হতে লাগল, আর সাধারণ মানুষ ভুলে যাওয়া হলো। এই রচনায় বাঙালি ও বাংলার পুরনো ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং মানুষের জীবনের ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে। এখানে দেখা যায়, শাসকগোষ্ঠীর অন্যায় শাসন ও শোষণের কারণে সাধারণ মানুষের জীবন অনেক কষ্টের ছিল। উদ্দীপকেও সেই কষ্টেরই চিত্র দেখা যায়। কারণ অনেক বছর পার হলেও তাদের জীবনে তেমন পরিবর্তন হয়নি। তাই প্রশ্নে বলা কথাটি যথার্থ।


সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২।
বাঙালিরা চিরকাল ‘ভেতো বাঙালি’ বলে পরিচিত হলেও গত অর্ধশতকে তাঁদের খাদ্যাভ্যাসে বড় রকমের পরিবর্তন এসেছে। গরিবরা চালের বদলে সস্তা গমের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন, আর ধনীরা বিদেশি খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে চীনা এবং পাশ্চাত্যের খাদ্যে। হ্যামবার্গার এবং হটডগের মতো পশ্চিমা খাবার এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি চীনা ও থাই খাবার নাগরিক সমাজে এতই ছড়িয়ে পড়েছে যে, মহিলারা তা বাড়িতেও তৈরি করার কৌশল শিখে ফেলছেন।

ক. সাধারণ লোকে কীসের পাত্রে রান্নাবান্না করত?

খ. “ভাত বাঙালির বহুকালের প্রিয় খাদ্য।”- ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে?- ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “সাদৃশ্য থাকলেও ‘কত কাল ধরে’ রচনার উদ্দিষ্ট বিষয় উদ্দীপকে অনুপস্থিত।”- বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩।
রওনক জাহান বেইলী রোডের নাট্যমঞ্চে বাঙালির প্রাচীন জীবনযাত্রার উপর একটি মঞ্চনাটক দেখলেন। তিনি নাটকের কলাকুশলীদের পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে হতবাক হলেন। কারণ পুরুষ অভিনেতারা পরনে শুধু লুঙ্গি, পায়ে কাঠের খড়ম, হাতে-গলায় তামার অলংকার পরেছেন। মেয়েরা পরেছেন মখমলের কাপড় আর হাতে-পায়ে-কানে-নাকে ও গলায় ব্রোঞ্জের তৈরি বেমানান সাইজের অলংকার পরেছেন। এই দৃশ্য দেখে তিনি মনে করলেন প্রাচীন যুগের পরিধেয় বস্ত্রের চেয়ে বর্তমান যুগের পরিধেয় সাজসজ্জা অনেক রুচিশীল ও মার্জিত।

ক. হাজার বছর পূর্বে কোন চালের ভাতের কদর সবচেয়ে বেশি ছিল?

খ. ‘প্রাচীনকালে জলপথই ছিল যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম।’-উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ।

গ. নাটকের কলাকুশলীদের সাজসজ্জার সাথে ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের প্রাচীন যুগের সাজসজ্জার বৈসাদৃশ্য বর্ণনা কর।

ঘ. উদ্দীপকের রওনক জাহানের বক্তব্যে ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে বলে তুমি মনে কর? মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪।
গামছা থেকে মসলিন অবধি কাপড় কিংবা রেশম তাদের হাতেই তৈরি হতো বটে, বেচত বেনেরা, পরত অন্যেরা, লাভ লুটত বেনে-ফরেরা। ওরা পরত গামছা, কৌপিন আর আঁটধুতিও হয়তো। কাজেই খাঁটি বাঙালির দারিদ্র্য ও নিঃস্বতা কখনো ঘোচেনি। বাঙলার বৃত্তিজীবী ও চাষী মাত্রই ছিল চির-অবজ্ঞেয় ও বঞ্চিত মানুষ।

ক. ‘ডুলি’ শব্দের অর্থ কী?

খ. হাজার বছর আগে নারী-পুরুষের পোশাক কেমন ছিল? ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত কোন দিকটির ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের মিল রয়েছে? বর্ণনা কর।

ঘ. “কত কাল ধরে’ প্রবন্ধে আলোচিত বাঙালির অতীত ও বর্তমান অবস্থার আংশিক চিত্র ‘উদ্দীপকেও প্রতিফলিত হয়েছে।”-তোমার মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫।
পথে পথে মিয়ানমারের রঙ্গিলা যুবতী-তরুণীরা। কলহাস্যে মুখর। বাড়ির সামনে, দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে কেউ কেউ। যুবক, যুবতী, প্রৌঢ়, বৃদ্ধ। মিয়ানমারের সবাই লুঙ্গি পরে। মেয়েদের পরনে লুঙ্গি ও ঝলমলে ব্লাউজ জাতীয় জামা বা গেঞ্জি।

ক. হাজার বছর আগে সব মেয়েই কী পরত?

খ. “সাধারণে পরত কাঠের খড়ম।”- কথাটি বুঝিয়ে দাও।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টি ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের কোন দিকটির প্রতিনিধিত্ব করছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের সামগ্রিক ভাব উদ্দীপকে স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬।
আমাদের দেশ তারে কত ভালোবাসি
সবুজ ঘাসের বুকে শেফালির হাসি,
মাঠে মাঠে চরে গরু নদী বয়ে যায়
জেলে ভাই ধরে মাছ মেঘের ছায়ায়।
রাখাল বাজায় বাঁশি কেটে যায় বেলা।
চাষা ভাই করে চাষ কাজে নেই হেলা।

ক. ইতিহাস বলতে শুধু কাদের কথাই বোঝায় না?

খ. সাধারণ লোকজন নিজেরাই যুক্তি-পরামর্শ করে কাজ করত কেন? বুঝিয়ে লেখ।

গ. ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের কোন দিকটি উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “উদ্দীপক এবং ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার চিত্র এক মনে হলেও দুইয়ের মাঝে পার্থক্য রয়েছে।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭।
মিমোর চাচার বিয়ে। তাই তার বাবা রাজশাহী থেকে ট্যাক্সি রিজার্ভকরে দাদার বাড়ি এসেছেন। পালকি করে তার চাচা বউ নিয়ে বাড়ি এলেন। অনেক কষ্টে পালকি জোগাড় করতে পারলেন দাদা। তিনি বলেন, আমাদের দেশে পালকি এখন জাদুঘরে। কাঁচা রাস্তায় রিকশা। চলে, গাড়িতেও যাওয়া যায়। চাচা বলেন, একালে যোগাযোগ ব্যবস্থার সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে এখন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়া যায়।

ক. আনিসুজ্জামান কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

খ. ‘আলো-আঁধারেরর খেলায় অনেক পুরনো কথা ঢাকা পড়েছে।’ পুরনো কথা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. মিমোর বাবার রাজশাহী থেকে ট্যাক্সিযোগে দাদা বাড়ি যাওয়া। ‘কত কাল ধরে’ প্রবন্ধের কোন দিকটি নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. “একালে যোগাযোগ ব্যবস্থার সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে।”- মিমোর চাচার এ উক্তিটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর।

নিচে উত্তরসহ কত কাল ধরে সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।

কত কাল ধরে সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ

Related Posts

Leave a Comment