উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন প্রবন্ধে নজরুল বলেন, সমাজে জাতপাত, ধনী-দরিদ্রের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। সকল মানুষই এক মহা-আত্মার অংশ, তাই কাউকে ছোট বলে ঘৃণা করার অধিকার কারও নেই। এই পোস্টে উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।
Table of Contents
উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন] ‘তোমারে সেবিতে হইল যাহারা মজুর, মুটে ও কুলি, তোমারে বহিতে যারা পবিত্র অঙ্গে লাগাল ধূলি; তারাই মানুষ, তারাই দেবতা, গাহি তাহাদেরি গান, তাদেরি ব্যথিত বক্ষে পা ফেলে আসে নব উত্থান!’ ক. ব্যক্তির সমষ্টিকে এক কথায় কী বলা যায়? খ. আমাদের দেশে জনশক্তি গঠন হতে পারছে না কেন? গ. উদ্দীপকের ‘মজুর, মুটে ও কুলি’ ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের কাদের সমার্থক? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের মূলভাব ‘উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন’ প্রবন্ধের খন্ডাংশ মাত্র- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর। |
উত্তরঃ
ক. ব্যক্তির সমষ্টিকে এক কথায় জাতি বলা যায়।
খ. ‘উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন’ প্রবন্ধে লেখক বলেছেন, আমাদের দেশে অনেক মানুষ এখনো অবহেলিত। সমাজের যেসব মানুষকে ছোটলোক, পতিত বা চন্ডাল বলা হয়, তারাই আসলে দেশের বড় শক্তি। দেশের মোট জনশক্তির মধ্যে দশ ভাগের আটভাগই এই শ্রেণির মানুষ। কিন্তু আমরা শুধু বাকি দুই ভাগ মানুষকে কাজে লাগিয়ে উন্নতি করতে চাই, যা সম্ভব নয়। তাই দেশের উন্নতির জন্য এদের সম্মান দিতে হবে এবং তাদের শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। লেখক মনে করেন, এই দশ আনা শক্তিকে কাজে না লাগালে দেশ কখনোই বিশ্বসভায় সম্মান পাবে না।
গ. উদ্দীপকে উল্লেখ করা ‘মজুর, মুটে ও কুলি’ আসলে সেইসব শ্রমজীবী মানুষ, যাদের কাজের মাধ্যমে সমাজ চলে। কাজী নজরুল ইসলামের উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন প্রবন্ধে এদের ‘ছোটলোক’ নামে ডাকা হলেও, লেখক তাঁদের দেশের আসল শক্তি বলে উল্লেখ করেছেন। সমাজে এদের অবহেলা করা হলেও দেশের অধিকাংশ কাজ এদের হাতেই সম্পন্ন হয়। এদের ছাড়া দেশের উন্নতি সম্ভব নয়। কবিতায় কবি এই পরিশ্রমী মানুষদের প্রশংসা করেছেন এবং তাঁদের অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। নজরুল বলেন, দেশের ‘দশ আনা’ শক্তি এই সাধারণ মানুষের মধ্যে লুকিয়ে আছে। কিন্তু আমরা সেই শক্তিকে অবহেলা করছি, তাই দেশের উন্নয়ন থমকে আছে। শ্রমজীবী মানুষদের সম্মান ও সুযোগ না দিলে গণতন্ত্রও গড়ে উঠবে না। তাই কবিতার মজুর-কুলিরাই প্রবন্ধের উপেক্ষিত শক্তির সমার্থক।
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাব সত্যিই উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন প্রবন্ধের একটি অংশমাত্র। সমাজের নিচু শ্রেণির যেসব মানুষ দিনরাত পরিশ্রম করে, তারাই আসলে সমাজ ও দেশের উন্নয়নের আসল শক্তি। অথচ তাদের ‘ছোটলোক’ বলে অবজ্ঞা করা হয়। সমাজের তথাকথিত ভদ্র শ্রেণি তাদের দয়াভিক্ষা দিলেও কখনো সম্মান দেয় না। নজরুল তাঁর প্রবন্ধে এই মানুষদের গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দেশের মোট শক্তির দশ আনা এদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। কিন্তু তাদের অবহেলা করায় দেশ এগোতে পারছে না। উদ্দীপকের কবিতায় শুধু এই নিচু শ্রেণির অবদান এবং তাদের সম্মান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রবন্ধে শুধু এই কথাই নয়, আরও গভীর চিন্তা আছে। সেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণভেদ ভুলে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান আছে। প্রাবন্ধিক চান, এই শ্রমজীবী মানুষগুলোকে ভাইয়ের মতো কাছে টেনে নিতে। তাঁর মতে, সমাজের এই শক্তিকে জাগাতে পারলেই দেশ এগিয়ে যাবে। উদ্দীপকে যদিও এই ভাব প্রকাশ পেয়েছে, তবে তা পুরো প্রবন্ধের একটি দিক মাত্র।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [এস. এস. সি পরীক্ষা যশোর বোর্ড ২০২৪] পৌরসভা নির্বাচনে জয়লাভ করে পৌর মেয়র তাঁর প্রথম ভাষণে বলেন, “আমার বন্ধুগণ, এ জয় আমার নয়, আপনাদের। আজ থেকে এ পৌরসভার প্রতিটি মানুষের সুখ-দুঃখের ভাগীদার আমি। এখন থেকে সকলে মিলেমিশে এলাকার কল্যাণ ও উন্নয়নে কাজ করব। আপনারাই আমার শক্তি।” ক. তথাকথিত ছোটলোক সম্প্রদায়ের কাজ করতে না পারার কারণ কী? খ. “তাহার আত্মা তোমার আত্মার মতোই ভাম্বর, আর মহা-আত্মার অংশ।”- এখানে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন? গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকে বর্ণিত পৌর মেয়রের দৃষ্টিভঙ্গিই ‘উপেক্ষিত শক্তির উদ্দদ্বোধন’ প্রবন্ধের মূল সুর।”- উক্তিটির যৌক্তিকতা যাচাই কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [এস. এস. সি পরীক্ষা যশোর বোর্ড ২০২০] নাজিমপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের মেয়ের বিয়ে- এলাহি কান্ড। তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে-মেয়ের বন্ধুবান্ধব, শহর থেকে আসা আত্মীয়-স্বজনে গোটা বাড়ি গমগম করছে। কিন্তু দাওয়াতে আসা বাজারের চামার, মেথর থেকে শুরু করে কুলি, মজুর, মুটে সবার উপস্থিতি দেখে বড় ছেলে মাহফুজ বিরক্ত হলেন, আরও অবাক হলেন এসব লোকদের যখন তার বাবা হাত ধরে খাবার টেবিলে বসালেন, নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করলেন। ছেলে বলল, ‘মান সম্মান আর কিছু বাকি রইল না।’ ছেলের কথায় চেয়ারম্যান বললেন, ‘এরাই দেশ ও জাতির সম্পদ, এসব মানুষই তো জাতির শক্তি।’ ক. কোনটি আত্মার ধর্ম নয়? খ. উপেক্ষিত শক্তির উদ্দ্বোধন’ প্রবন্ধে বোধন-বাঁশিতে সুর দিতে বলা হয়েছে কেন? গ. উদ্দীপকের মাহফুজের মাধ্যমে ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের যে দিকটির ইঙ্গিত করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর। ঘ. চেয়ারম্যান সাহেব যেন ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের লেখকের ভাবনাকেই ধারণ করেছেন- বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [এস. এস. সি পরীক্ষা কুমিল্লা বোর্ড ২০২০] মজিদ সাহেব একজন বিশিষ্ট সমাজসেবক। তিনি শিক্ষিত ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে তিনি সমাদৃত। তিনি সকল মানুষের ভালো-মন্দের খোঁজখবর রাখেন। সকল স্তরের মানুষের সাথে মিলেমিশে বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজেও অংশ নেন। তাঁকে এলাকার মানুষ পছন্দ করে। তিনিও মনে করেন এলাকার সকল স্তরের মানুষই তার একমাত্র শক্তি। ক. ‘মসীময়’ শব্দের অর্থ কী? খ. আমাদের দেশে জনশক্তি গঠিত হতে পারছে না কেন? গ. উদ্দীপকের মজিদ সাহেবের কর্মকান্ডে ‘উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন’ প্রবন্ধের যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের সমগ্র অংশকে প্রতিপন্ন করেনি”- মন্তব্যটির সত্যতা নির্ণয় কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। [এস. এস. সি পরীক্ষা বরিশাল বোর্ড ২০২০] উদ্দীপক-১: “দেখিনু সেদিন রেলে, কুলি বলে এক বাবু সা’ব তারে ঠেলে দিলে নীচে ফেলে। চোখ ফেটে এল জল, এমনি ক’রে কি জগৎ জুড়িয়া মার খাবে দুর্বল?” উদ্দীপক-২: “জেনেছি সত্য বহুদিন মনে মনে, মুক্তির পথ মিশে গেছে জনগণে। যেখানে লক্ষ লোকের রুক্ষ হাত, সৃষ্টির মাঝে নিয়োজিত দিনরাত। সেই জনতার দীপ্ত মিছিল ধরে, নবযুগ আসে রক্ত দিনের ভোরে।” ক. ভারতে অসাধ্য সাধন করেছিলেন কে? খ. “ছোটলোকদের অন্তর কাঁচের ন্যায় স্বচ্ছ”- এ কথা দ্বারা লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন তা ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপক-১ এর বাবু সা’ব ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের কাদের প্রতিনিধিত্ব করে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপক-২ এর মূলভাব যেন ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের মূলভাবের বহিঃপ্রকাশ- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। [এস. এস. সি পরীক্ষা দিনাজপুর বোর্ড ২০২০] “দেখিনু সেদিন রেলে, কুলি বলে এক বাবু সা’ব তারে ঠেলে দিলে নীচে ফেলে! চোখ ফেটে এল জল, এমনি ক’রে কি জগৎ জুড়িয়া মার খাবে দুর্বল?” ক. বোধন-বাঁশি কী? খ. ‘দেখিবে বিশ্ব তোমাকে নমস্কার করিবে।’ ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের ‘কুলি’ ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের যাদের প্রতিনিধিত্ব করে তাদের সম্পর্কে আলোচনা কর। ঘ. “উদ্দীপকে উল্লিখিত বাবু সা’ব যেন ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের আভিজাত্য-গর্বিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি।”-মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। [এস. এস. সি পরীক্ষা সিলেট বোর্ড ২০১৯] দিদার সাহেব তার পরিচিত কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে একটি সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। এ সমিতিতে তিনি খেটে খাওয়া মানুষদের সদস্য হিসেবে নিতে নারাজ। কারণ তিনি মনে করেন এদের দিয়ে কিছু হবে না। তিনি এদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করেন। অপরদিকে আরমান। সাহেব তার এলাকার ছিন্নমূল হত-দরিদ্র লোকদের নিয়ে সামাজিক সেবামূলক কাজ শুরু করেন যেখানে অনেক লোক অংশ নেয়। আরমান সাহেব মনে করেন এরা অবহেলার পাত্র নয়। দেশের উন্নয়নে এদেরও ভূমিকা অনেক। ক. তথাকথিত ‘ছোটলোক’-এর অন্তর কেমন? খ. উপেক্ষিত শক্তি কীভাবে দেশে যুগান্তর আনবে? বুঝিয়ে লেখ। গ. উদ্দীপকের দিদার সাহেবের মধ্যে ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের কাদের মানসিকতা ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের আরমান সাহেব ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের লেখকের মানসমূর্তি”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। [এস. এস. সি পরীক্ষা বরিশাল বোর্ড ২০১৯] i. দেখিনু সেদিন রেলে, কুলি বলে এক বাবু সা’ব তারে ঠেলে দিলে নিচে ফেলে। চোখ ফেটে এল জল, এমনি করে কি জগৎ জুড়িয়া মার খাবে দুর্বল? ii. বর্বর বলি যাহাদের গালি পাড়িল ক্ষুদ্রমনা কূপমণ্ডুক অংসযমীর আখ্যা দিয়াছে যারে, তারি তরে ভাই গান রচে যাই, বন্দনা করি তারে। ক. কার হাত ধরে বোধন-বাঁশিতে সুর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে? খ. মহাত্মা গান্ধী ‘ছোটলোক’-কে বুকে ধরে ভাই বলে ডেকেছেন কেন? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপক i-এ ‘উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন’ প্রবন্ধের কোন দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপক ii-এ ‘উপেক্ষিত শক্তির উদবোধন’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে। বিশ্লেষণ কর। |
নিচে উত্তরসহ উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।
উপেক্ষিত শক্তির উদ্বোধন সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ
আরও পড়ুনঃ