আমি কোনো আগন্তুক নই জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর

“আমি কোনো আগন্তুক নই” কবিতায় আহসান হাবীব তাঁর জন্মভূমির সঙ্গে অটুট সম্পর্কের গভীরতা তুলে ধরেছেন। কবির ভাষায় গ্রামীণ জীবনযাত্রার প্রতিটি দিক—ধানক্ষেত, নদী, মাঠ—সবই যেন তাঁর আত্মার অঙ্গ। এই পোস্টে ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলা আমি কোনো আগন্তুক নই জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও অনুধাবন প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।

আমি কোনো আগন্তুক নই জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

১। আহসান হাবীবের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী?
উত্তর: আহসান হাবীবের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম ‘রাত্রিশেষ’।

২। কদম আলী কিসে নত?
উত্তর: কদম আলী অকাল বার্ধক্যে নত।

৩। অকাল বার্ধক্যে নত কে?
উত্তর: অকাল বার্ধক্যে নত কদম আলী।

৪। কবি কোন দেশি পথিক নন?
উত্তর: কবি ভিনদেশি পথিক নন।

৫। ধানের মঞ্জরি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ধানের মঞ্জরি হলো ধানের মুকুল বা শিষ।

৬। ‘আশায় বসতি’ কী ধরনের রচনা?
উত্তর: ‘আশায় বসতি’ আহসান হাবীবের কাব্যগ্রন্থ।

৭। কবি আহসান হাবীব-এর হাতের স্পর্শ কোথায় লেগে আছে?
উত্তর: কবি আহসান হাবীবের হাতের স্পর্শ লেগে আছে বৈঠায় ও লাঙলে।

৮। ধানের মঞ্জরি কী?
উত্তর: ধানের মঞ্জরি হলো মুকুল বা শিষ।

৯। কোন পাখি কবিকে চেনে?
উত্তর: মাছরাঙা পাখি কবিকে চেনে।

১০। কোন পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক থাকাকালে আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক থাকাকালে আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন।

১১। আহসান হাবীব কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: আহসান হাবীব ১৯১৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

১২। আহসান হাবীব কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: আহসান হাবীব পিরোজপুর জেলার শঙ্করপাশা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

১৩। আহসান হাবীব কোন পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন?
উত্তর: আহসান হাবীব ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন।

১৪। কত সালে আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: ১৯৮৫ সালে আহসান হাবীব মৃত্যুবরণ করেন।

১৫। আসমানের তারা কার সাক্ষী?
উত্তর: আসমানের তারা কবির সাক্ষী।

১৬। ‘নিশিরাইত’ অর্থ কী?
উত্তর: ‘নিশিরাইত’ অর্থ গভীর রাত।

১৭। কার দৃষ্টি স্থির?
উত্তর: মাছরাঙার দৃষ্টি স্থির।

১৮। মাছরাঙা কাকে চেনে?
উত্তর: মাছরাঙা কবিকে চেনে।

১৯। কে কোনো অভ্যাগত নন?
উত্তর: কবি কোনো অভ্যাগত নন।

২০। ‘আগন্তুক’ অর্থ কী?
উত্তর: ‘আগন্তুক’ অর্থ আগমন করেছে এমন অপরিচিত কেউ।

২১। কবি কার নামে শপথ নিয়েছেন?
উত্তর: কবি খোদার নামে শপথ নিয়েছেন।

২২। এখানে থাকা মানে কোথায় থাকা?
উত্তর: এখানে থাকা মানে সারাদেশে থাকা।

২৩। জ্যোৎস্নার চাদরে কী ঢাকা?
উত্তর: জ্যোৎস্নার চাদরে নিশিন্দার ছায়া ঢাকা।

২৪। কার চোখ ক্লান্ত?
উত্তর: কদম আলীর চোখ ক্লান্ত।

২৫। কবি কার চিরচেনা স্বজন?
উত্তর: কবি কদম আলীর চিরচেনা স্বজন।

২৬। কবি আহসান হাবীব-এর হাতের স্পর্শ কোথায় লেগে আছে?
উত্তর: কবি আহসান হাবীবের হাতের স্পর্শ লেগে আছে বৈঠায় ও লাঙলে।

২৭। মাটিতে কার গন্ধ পাওয়া যাবে?
উত্তর: মাটিতে কবির গন্ধ পাওয়া যাবে।

২৮। কবি নদীকে কী নদী বলেছেন?
উত্তর: কবি নদীকে ‘উধাও নদী’ বলেছেন।

২৯। কে মুগ্ধ এক অবোধ বালক?
উত্তর: কবি মুগ্ধ এক অবোধ বালক।

৩০। ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কোন মাসের উল্লেখ আছে?
উত্তর: ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় ‘কার্তিক’ মাসের উল্লেখ আছে।

৩১। আহসান হাবীবের কবিতায় কোন দিকটি বিশিষ্ট ব্যঞ্জনা দান করেছে?
উত্তর: আহসান হাবীবের কবিতায় গভীর আশাবাদের দিকটি বিশিষ্ট ব্যঞ্জনা দান করেছে।

৩২।  ‘তার ক্লান্ত চোখের আঁধার’- কার?
উত্তর:  ‘তার ক্লান্ত চোখের আঁধার’- এখানে তার হচ্ছে কদম আলীর।

৩৩।  কবি কীরূপ নদীর মুগ্ধ এক অবোধ বালক?
উত্তর: কবি ধু ধু নদীর মুগ্ধ এক অবোধ বালক।

৩৪। বাঁশবাগানে বিস্তর কীসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: বাঁশবাগানে বিস্তর জোনাকির কথা বলা হয়েছে।

৩৫।  কবি কার নামে শপথ নিয়েছেন?
উত্তর: কবি খোদার নামে শপথ নিয়েছেন।

আমি কোনো আগন্তুক নই কবিতার অনুধাবন প্রশ্ন

১। ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’- কবি একথা বলেছেন কেন?
উত্তর: ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’- কবি এ কথা বলেছেন জন্মভূমির প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ ও নিবিড় বন্ধনের বিষয়টি বোঝানোর জন্য।
‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি তাঁর জন্মভূমির সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলেছেন। কবির কাছে দেশ মানে শুধু চারপাশের প্রকৃতি নয়, তাকে নিজের মনে গভীরভাবে অনুভব করা। কবি গ্রামের পরিবেশেই বড় হয়েছেন। গ্রামের মাঠ-ঘাট, পথ-প্রান্তর, খেতের সরু পথ, তার পাশে ধানখেত, নদীর ধারে, গ্রামের মানুষ—সবই তাঁর খুব চেনা। কবিও তাদের কাছে আপনজন। তাই তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’।

২। কদম আলী অকাল বার্ধক্যে নত কেন? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: অভাব দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত বলে কদম আলী অকাল বার্ধক্যে নত।
‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি জন্মভূমির সঙ্গে নিজের সম্পর্কের মাধ্যমে দেশের মানুষের টান তুলে ধরেছেন। তিনি গ্রামের পথ-ঘাট, সরু পথ, ধানখেত, নদীর ধারে বসবাসকারী মানুষদের কথা বলেছেন। যেমন কদম আলী, জমিলার মা। কবি কদম আলীর অভাব-অনটনের জীবন স্মরণ করেছেন, যে না খেয়ে খেটে খেটে অকালেই বুড়িয়ে গেছে। কদম আলীর মাধ্যমে কবি গ্রামের দরিদ্র মানুষের জীবনচিত্র দেখিয়েছেন।

৩। “জমিলার মা’র শূন্য খাঁ খাঁ রান্নাঘর শুকনো থালা সব চিনি”- এ কথাটি দ্বারা কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: ‘জমিলার মা’র শূন্য খাঁ খাঁ রান্নাঘর শুকনো খালা সব চিনি’- এ কথাটি দ্বারা কবি গরিব ও অভাবী মানুষের জীবনযাপন সম্পর্কে তার জানা-শোনার বিষয়টিকে বুঝিয়েছেন।
‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনি দেশের পরিবেশ ও মানুষের কাছে একজন পরিচিত মানুষ। গ্রামের জনপদ, মানুষ ও তাদের জীবনের নানা দিক তাঁর অতি চেনা। তিনি স্বদেশের দরিদ্র মানুষের অভাব-অনটনের জীবনও জানেন। এমনকি তাদের ফাঁকা রান্নাঘরের কথাও তাঁর জানা আছে।

৪। কবি ‘সর্বত্র থাকা’ বলতে কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: সর্বত্র থাকা বলতে কবি সমগ্র বাংলাজুড়ে তাঁর অবস্থানকে বুঝিয়েছেন।
কবি বাংলার সন্তান, সবুজ বাংলার মাটিতে তাঁর জন্ম ও বড় হওয়া। শৈশব, কৈশোর আর যৌবন তিনি এই মাটিতেই কাটিয়েছেন। তাই এই ভূমির সঙ্গে তাঁর আত্মার বন্ধন গড়ে উঠেছে। গ্রামের গাছপালা, মাছরাঙা, কদম আলী আর জমিলার মা সবাই তাঁকে চেনে, আর তিনিও তাদের চেনেন আপনজন হিসেবে। এই চেনাজানার সম্পর্কেই তিনি মনে করেন তিনি সর্বত্র আছেন। তাই ‘সর্বত্র থাকা’ বলতে তিনি কোনো নির্দিষ্ট গ্রাম নয়, পুরো বাংলাকেই বোঝাতে চেয়েছেন।

৫। ‘খোদার কসম আমি ভিনদেশি পথিক নই’- কবি কেন কসম করেছেন?
উত্তর: ‘খোদার কসম আমি ভিনদেশি পথিক নই’- কবি জন্মসূত্রে এ দেশের মানুষ এবং তিনি বিদেশি কেউ নন বলে এ কসম করেছেন।
জন্মভূমির সঙ্গে কবির সম্পর্ক সারাজীবনের। জন্মভূমির মাটিতেই তাঁর অস্তিত্বের শেকড় গেঁথে আছে। তাই তিনি কোনো আগন্তুক নন। এ দেশের প্রকৃতি, জনপদ যেমন তাঁর চেনা, তেমনি সবাইও তাঁকে চেনে। আকাশের তারা, জমিনের ফুল, জোনাকি আর গাছ সবই সাক্ষী যে কবি এ দেশেরই মানুষ। তবুও সবার কাছে এটি আরও সত্যি প্রমাণ করতে তিনি খোদার কসম করে বলেছেন তিনি ভিনদেশি নন, এ দেশেরই সন্তান। কারণ মানুষ স্রষ্টার নামে কখনো মিথ্যা বলে না। সত্য প্রতিষ্ঠা করতেই কবি খোদার কসম করেছেন।

৬। ‘সামনে ধু ধু নদীর কিনার আমার অস্তিত্বে গাঁথা’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: শৈশবের নদীতীর এবং তার সৌন্দর্যকে কবি সমস্ত সত্তা দিয়ে ভালোবেসেছেন এবং প্রতিনিয়ত তাকে অনুভব করেন- এ ভাবটি কবি প্রশ্নোক্ত চরণে প্রকাশ করেছেন।
‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি জন্মভূমির প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। তিনি গ্রামবাংলার সন্তান; দেশের প্রকৃতি, পরিবেশ, নদী আর মাঠ তাঁর জীবনের সঙ্গে মিশে আছে। পল্লিমায়ের কোলে ছোট থেকে তিনি বড় হয়েছেন। নদীর তীরে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ঘুরেছেন, আর নদীর সঙ্গে গড়ে উঠেছে তাঁর আত্মার সম্পর্ক। নদীর ধারে কাটানো সেই মুহূর্তগুলো কবিকে আনন্দ দেয়। ধু ধু নদীর তীরের সৌন্দর্য তাঁর মনে গভীরভাবে ছাপ ফেলেছে। তাই প্রশ্নোক্ত লাইনটিতে কবির এই অনুভূতিই প্রকাশ পেয়েছে।

৭। ‘আমার অস্তিত্বে গাঁথা’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: ‘আমার অস্তিত্বে গাঁথা’ বলতে কবির স্বদেশের গ্রামীণ প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠার বিষয়টি বুঝিয়েছেন।
‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি দেশের প্রতি নিজের গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। জন্মভূমির সঙ্গে শিকড় গেঁথে তিনি সমগ্র দেশকে আপন করেছেন। দেশের সবকিছু তাঁর নিজের সত্তার সঙ্গে মিশে আছে। তাই তাঁর কাছে দেশ মানে শুধু চারপাশের প্রকৃতি নয়, বরং তা আপন করে অনুভব করা। কবি গ্রামীণ পরিবেশেই বড় হয়েছেন। গ্রামের মাঠ-ঘাট, সরু পথ, ধানখেত, নদীর তীর, আর জনপদের মানুষ সবই তাঁর চেনা। তাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আন্তরিক ও ঘনিষ্ঠ। কবিও তাদের কাছে একজন চেনা মানুষ।

৮। ‘আমি স্বাপ্নিক নিয়মে এখানেই থাকি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ‘আমি স্বাপ্নিক নিয়মে এখানেই থাকি’- কথাটি দ্বারা কবি স্বপ্নময় স্বদেশের অনুভবে সর্বত্র বিরাজ করাকে বুঝিয়েছেন।
কবি যে দেশে জন্মেছেন, সেই দেশ স্বপ্নভরা। সেখানকার গ্রাম, প্রকৃতি আর মানুষের জীবনও যেন স্বপ্নে মোড়া। কবি সেই স্বপ্নের আবহেই বড় হয়েছেন। অবাধ স্বপ্নের মতোই তিনি সেখানে বেঁচে ছিলেন, আর আজও তিনি পুরো দেশের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছেন।

৯। গ্রামীণ জনপদের সঙ্গে কবির জীবন কীভাবে বাঁধা পড়ে আছে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: গ্রামীণ জনপদের সঙ্গে কবির জীবন গভীর বন্ধনে বাঁধা পড়ে আছে।
‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি জন্মভূমির সঙ্গে মানুষের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা বলেছেন। নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি চারপাশের চেনা প্রকৃতি ও পরিবেশকে সাক্ষী করেছেন। আকাশ, ফুল, জোনাকি, পুকুর, মাছরাঙা—সবই তাঁর চেনা, আর সেগুলোও তাঁকে চেনে। কবি গ্রামীণ পরিবেশেই বড় হয়েছেন। গ্রামের মাঠ, পথ-প্রান্তর, সরু পথ, ধানের ক্ষেত আর নদীর ধারে তাঁর শিকড় গাঁথা। তাই কবির জীবন গ্রামীণ জনপদের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত হয়ে আছে।

১০। নদীর কিনার কীভাবে কবির অস্থিমজ্জায় গ্রথিত হয়ে আছে?
উত্তর: কবি তাঁর শৈশবকাল নদীর কিনারে কাটিয়েছেন বলে সেই নদীর কিনার গভীরভাবে কবির অস্থিমজ্জায় গেঁথে আছে।
কবি গ্রামবাংলার সন্তান। যেদিন থেকে সে একা হাঁটতে শিখেছে, সেদিন থেকে বহুবার নদীর ধারে গেছে। সেখানে মাছ ধরেছে, খেলেছে, গোসল করেছে। কবি নিজেকে নদীর প্রতি মুগ্ধ এক অবোধ বালক হিসেবে দেখেছেন। এজন্য নদীর ধারের দৃশ্য তাঁর মনে পুরোপুরি চিহ্নিত হয়ে আছে। এভাবেই নদীর কিনারা কবির অস্থিমজ্জায় গেঁথে আছে।

১১। “আমি এই উধাও নদীর মুগ্ধ এক অবোধ বালক।”- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: “আমি এই উধাও নদীর মুগ্ধ এক অবোধ বালক।”- কবি এখানে নদীর প্রতি তার গভীর অনুরাগের বিষয়টি স্পষ্ট করে তুলেছেন।
কবি গ্রামবাংলার সন্তান। যেদিন থেকে সে একা হাঁটতে শিখেছে, সেদিন থেকে অসংখ্যবার নদীর ধারে গেছে। সেখানে মাছ ধরেছে, খেলেছে, গোসল করেছে। কবি নিজেকে নদীর প্রতি মুগ্ধ এক অবোধ বালক হিসেবে দেখেছেন। তাই নদীর ধারের স্মৃতি তার মনে পুরোপুরি অঙ্কিত। এভাবেই নদীর কিনারা কবির অস্থিমজ্জায় গেঁথে আছে।

১২। কবি প্রকৃতিকে সাক্ষী মেনেছেন কেন?
উত্তর: এদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে কবির যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক তা প্রমাণ করার জন্য কবি প্রকৃতিকে সাক্ষী মেনেছেন।
কবি আহসান হাবীব ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় নিজেকে এদেশেরই একজন বলেছেন। তিনি তার পরিচয় প্রকাশের জন্য আকাশের তারা, জমিনের ফুল, নিশিরাত, বাঁশবাগান, জোনাকি, জারুল ও জামরুল গাছের মতো প্রকৃতির উপাদানকে সাক্ষী নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন যে এদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে তার অটুট সম্পর্ক আছে। মূলত এখানেই তার জন্মভূমির প্রতি গভীর প্রেমের প্রকাশ ঘটে।

১৩। জন্মভূমির মধ্যে শিকড় গেড়ে মানুষ সমগ্র দেশকে আপন করে পায়’- বিশ্লেষণ কর।
উত্তর: প্রশ্নোক্ত বাক্যটিতে জন্মভূমির সঙ্গে মানুষের আজীবনের সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে।
মা যেমন চিরন্তন, মাতৃভাষার মতোই মানুষের সঙ্গে মাতৃভূমির সম্পর্কও চিরকাল স্থায়ী। মানুষ তার দেশের সবকিছুকে খুব চেনা ও পরিচিত মনে করে। দেশ মানে শুধু চারপাশের প্রকৃতি নয়, বরং এটিকে নিজের অন্তরের সঙ্গে মেলানো। মানুষ তার অস্তিত্বের সঙ্গে দেশকে মিশিয়ে নিতে চায়। জন্মভূমির সঙ্গে মানুষের এই সম্পর্ক সারাজীবন থাকে। তাই জন্মভূমির শিকড় গেড়ে মানুষ পুরো দেশটিকেই নিজের মনে করে নেয়।

১৪। জারুল, জামরুল, পুবের পুকুর- এসবকে কবি কেন সাক্ষী মেনেছেন?
উত্তর: জারুল, জামরুল, পুবের পুকুর- এসবকে কবির সাক্ষী মানার কারণ হলো- তিনি এসবের মাঝেই বেড়ে উঠেছেন।
কবির বাড়িতে জারুল ও জামরুল গাছ আছে। শৈশব ও কৈশোরে কবি পুবের পুকুরে সাঁতার কেটে খেলেছেন। ফলে এই সব স্থান ও জায়গাগুলো কবিকে খুব ভালোভাবে চেনে। তাই যখন কবি নিজের পরিচয় তুলে ধরেছেন, তখন তিনি এই সবকিছুকে সাক্ষী হিসেবে নিয়েছেন। কারণ অন্য কেউ না জানলেও জারুল-জামরুল গাছ এবং পুকুর কবির দুরন্ত শৈশব ও কৈশোর প্রত্যক্ষ করেছে।

১৫। মাটিতে কবির গন্ধ কেন?
উত্তর: বাংলার মাটির সঙ্গে নিজের অস্তিত্বের চিরন্তন সম্পর্কের কারণেই মাটিতে কবির গন্ধ লেগে আছে।
কবি বাংলায় জন্মেছেন। বাংলার মায়ের কোলে কবির শৈশব, কৈশোর এবং যৌবন কেটেছে। কবির বার্ধক্যের সাক্ষীও এই মাটি। কবি দেশের প্রতি, দেশের প্রকৃতি ও কোমল মাটির প্রতি গভীর ভালোবাসা অনুভব করেন। তাঁর দেহে এই মাটিরই গন্ধ লেগে আছে।

১৬। মাছরাঙা কবিকে চেনে কীভাবে?
উত্তর: কবি বাংলার প্রকৃতিতেই বড় হয়েছেন। এদেশের ফুল, পাখি কবির স্বদেশ প্রকৃতির চিরচেনা অনুষঙ্গ বলে মাছরাঙা পাখি কবিকে চেনে।
বাংলার চিরসবুজ প্রকৃতির মাঝে কবি আজীবন থাকে। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে কবি তার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছেন। দীর্ঘ সময় এই জনপদে থাকায় মাছরাঙা পাখির সঙ্গে তাঁর গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। যেমন কবি প্রতিদিন পাখিটিকে দেখেছেন, তেমনি পাখিটিও কবিকে চেনে। তাই মাছরাঙা পাখি কবিকে চিনে।

Related Posts

Leave a Comment