আমাদের লোকশিল্প ৬ষ্ঠ শ্রেণি প্রশ্ন উত্তর (অনুধাবনমূলক)

কামরুল হাসানের ‘আমাদের লোকশিল্প’ প্রবন্ধটি বাংলাদেশের লোকশিল্পের গুরুত্ব, বৈচিত্র্য এবং এর সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা প্রদান করে। এটি পাঠকদের দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং শিল্পের প্রতি গর্ববোধ জাগিয়ে তোলে। এই পোস্টে আমাদের লোকশিল্প ৬ষ্ঠ শ্রেণি প্রশ্ন উত্তর (অনুধাবনমূলক) লিখে দিলাম।

Image with Link Descriptive Text

আমাদের লোকশিল্প ৬ষ্ঠ শ্রেণি প্রশ্ন উত্তর

১। ‘ঢাকাই মুসলিনের কদর ছিল দুনিয়া জুড়ে’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে?

উত্তর: ঢাকাই মসলিন বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত ছিল। এটি এতই পাতলা এবং হালকা ছিল যে, একটি আংটির ভিতর দিয়ে কয়েকশ গজ কাপড় প্রবেশ করানো যেত। মোগল বাদশাহদের বিলাসবহুল পোশাক হিসেবে এর ব্যবহার এবং এর শিল্পগুণের কারনে বিশ্বব্যাপী কদর ছিল।


২। বর্ষাকাল নকশি কাঁথা তৈরির জন্য উপযুক্ত সময় কেন?

উত্তর: নকশিকাঁথা তৈরিতে বর্ষাকালকে উপযুক্ত সময় মনে করা হতো কারণ এই সময়ে গ্রামীণ নারীরা বাইরে কাজ করতে পারতেন না। বৃষ্টির দিনে ঘরে বসে তারা কাঁথা সেলাই করতেন। এটি তাদের অবসর সময়কে সৃজনশীল কাজে ব্যবহারের সুযোগ দিত।


৩। লোকশিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের দায়িত্ব আমাদের সকলের কেন?

উত্তর: লোকশিল্প সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের দায়িত্ব আমাদের সকলের কারণ এটি শুধু শিল্প নয়, বরং আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং জাতীয় পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি সংরক্ষণ না করলে আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলব।


৪। লোকশিল্প সংরক্ষণ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: লোকশিল্প সংরক্ষণ প্রয়োজন কারণ এটি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং পরিচয়ের অংশ। এটি শিল্পীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখে। লোকশিল্পের মাধ্যমে দেশের ইতিহাস এবং শিল্পগুণ বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেতে পারে।


৫। জামদানি শাড়ি কেন বাংলাদেশের গর্বের বস্তু?

উত্তর: জামদানি শাড়ি বাংলাদেশের গর্বের বস্তু কারণ এটি ঢাকাই মসলিনের ঐতিহ্য বহন করে। এর নকশা, বুনন কৌশল এবং শিল্পগুণ এটিকে অনন্য করে তোলে। দেশে-বিদেশে জামদানি শাড়ির চাহিদা এটিকে গর্বের বস্তু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।


৬। শীতলক্ষ্যা নদীর পানি কেন জামদানি বোনার জন্য উপযোগী?

উত্তর: শীতলক্ষ্যা নদীর পানি জামদানি বোনার জন্য উপযোগী কারণ এর পানির বাষ্প থেকে সৃষ্ট আর্দ্রতা জামদানি বুননের জন্য প্রয়োজনীয়। এই আর্দ্রতা সুতা নরম রাখে এবং বুননের কাজ সহজ করে।


৭। খাদি কাপড়ের বিশেষত্ব কী?

উত্তর: খাদি কাপড়ের বিশেষত্ব হলো এটি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি। তুলা থেকে হাতে সুতা কাটা হয় এবং হস্তচালিত তাঁতে কাপড় বোনা হয়। এটি গ্রামীণ জীবনের ঐতিহ্য বহন করে এবং স্বদেশি আন্দোলনের সময় বিদেশি কাপড়ের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছিল।


৮। নকশিকাঁথা তৈরিতে কেন ছয় মাস সময় লাগত?

উত্তর: নকশিকাঁথা তৈরিতে ছয় মাস সময় লাগত কারণ এটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম এবং সময়সাপেক্ষ কাজ। প্রতিটি নকশা হাতে সেলাই করা হতো এবং এতে বিভিন্ন রং ও নকশার সমন্বয় থাকত। এ কাজে শিল্পীর ধৈর্য এবং দক্ষতার প্রয়োজন হতো।


৯। পোড়ামাটির কাজ কেন বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অংশ?

উত্তর: পোড়ামাটির কাজ বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অংশ কারণ এটি হাজার বছরের পুরনো শিল্প। মাটির কলস, হাঁড়ি, পুতুল, এবং মন্দির-মসজিদের নকশাদার ইট এ শিল্পের নিদর্শন। এটি শুধু ব্যবহারিক নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গুরুত্বও বহন করে।


১০। কাঠের কাজের ঐতিহ্য কেন আজ হারিয়ে যাচ্ছে?

উত্তর: কাঠের কাজের ঐতিহ্য আজ হারিয়ে যাচ্ছে কারণ আধুনিক নির্মাণ সামগ্রী এবং কারখানায় তৈরি ফার্নিচারের চাহিদা বেড়েছে। পুরনো খাট, পালঙ্ক এবং দরজার নকশা এখন আর তেমন দেখা যায় না। তবে কিছু পুরনো নমুনা থেকে এর ঐতিহ্যের আভাস মেলে।


১১। বাঁশের শিল্প কেন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: বাঁশের শিল্প বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ বাঁশ সহজলভ্য এবং বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য। এটি দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে শুরু করে শৌখিন জিনিসপত্র তৈরি করা হয়। এ শিল্প গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


১২। কাঠের কাজের ঐতিহ্য কীভাবে টিকে আছে?

উত্তর: কাঠের কাজের ঐতিহ্য পুরনো খাট, পালঙ্ক, দরজা এবং নৌকার কাজে টিকে আছে। যদিও আধুনিক ফার্নিচারের চাহিদা বেড়েছে, তবুও কিছু কারিগর এখনও হাতে তৈরি কাঠের সামগ্রী তৈরি করেন। এগুলো শিল্পগুণ এবং ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।


১৩। বাঁশের শিল্প কেন গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: বাঁশের শিল্প গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সহজলভ্য কাঁচামাল দিয়ে তৈরি হয় এবং গ্রামীণ কারিগরদের জন্য আয়ের উৎস। বাঁশ দিয়ে তৈরি সামগ্রী যেমন ঝুড়ি, মাদুর, এবং শৌখিন জিনিসপত্র স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা রয়েছে।


১৪। লোকশিল্প বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ-কেন বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর: লোকশিল্প বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ কারণ এটি দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং শিল্পগুণকে ধারণ করে। এটি স্থানীয় জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি এবং শিল্পীদের সৃজনশীলতার প্রতিফলন। লোকশিল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পায়।


১৫। লোকশিল্প কিভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হৃদয়ের সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে?

উত্তর: লোকশিল্প আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হৃদয়ের সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে কারণ এটি একটি দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ একে অপরের সংস্কৃতি বুঝতে এবং সম্মান করতে শেখে।


Related Posts

Leave a Comment