অন্যায় যে করে অন্যায় যে সহে ভাবসম্প্রসারণ সহজ করে

সমাজে অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহ্যকারী উভয়ই সমান অপরাধী। মানুষ হিসেবে আমাদের যেমন অধিকার রয়েছে, তেমনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দায়িত্বও আমাদের উপর বর্তায়। এই পোস্টে অন্যায় যে করে অন্যায় যে সহে ভাবসম্প্রসারণ সহজ করে লিখে দিলাম।

অন্যায় যে করে অন্যায় যে সহে ভাবসম্প্রসারণ

ভাব-সম্প্রসারণ: অন্যায় করা এবং অন্যায় সহ্য করা দুটিই সমান অপরাধ। মানুষ হিসেবে আমাদের যেমন অধিকার আছে, তেমনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোও আমাদের কর্তব্য। যখন কেউ অন্যায় করে, তখন সে শুধু একজনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, পুরো সমাজের শান্তি নষ্ট করে। আবার যে চুপ থেকে অন্যায় মেনে নেয়, সে আসলে সেই অন্যায়কে সাহায্য করে। এভাবে অন্যায় বাড়তে থাকে এবং সমাজে অশান্তি ছড়ায়। ক্ষমা ভালো গুণ, কিন্তু সব অন্যায় ক্ষমা করা যায় না। অন্যায়কারীকে শাস্তি না দিলে সে বারবার অন্যায় করবে। তেমনি যে অন্যায় দেখেও প্রতিবাদ করে না, সেও অপরাধী। সমাজকে সুন্দর রাখতে হলে আমাদের সবাইকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহ্যকারী দুটোকেই ঘৃণা করতে হবে। কারণ তাদের কারণেই সমাজে অশান্তি বাড়ে। আমাদের মনে রাখতে হবে, ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ালে সমাজে শান্তি আসবে। তাই কবির কথায়, “অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে” এই ঘৃণা যেন আমাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি দেয়। এভাবেই আমরা একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে পারব, যেখানে সবাই নিরাপদে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

ভাবসম্প্রসারণ অন্যায় যে করে (বড় করে)

ভাব-সম্প্রসারণ: অন্যায় করা এবং অন্যায় সহ্য করা – এই দুটোই সমাজের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর। আমরা সবাই মানুষ, আমাদের কিছু অধিকার আছে, কিন্তু সেইসাথে কিছু দায়িত্বও আছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা আমাদের সবার দায়িত্ব। যখন কেউ অন্যায় করে, তখন শুধু একজন মানুষের ক্ষতি হয় না, পুরো সমাজের শান্তি নষ্ট হয়। যেমন কেউ যদি কারো জিনিস চুরি করে, বা কাউকে মারে, বা কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করে, এগুলো সবই অন্যায়। কিন্তু শুধু অন্যায় করলেই সমস্যা না, যে লোকটা এই অন্যায় দেখেও কিছু বলে না, চুপ করে থাকে, সেও কিন্তু সমান অপরাধী। কারণ তার চুপ থাকার কারণে অন্যায়কারী মনে করে সে যা খুশি তাই করতে পারে। এটা ঠিক যেন চোরকে চুরি করতে দেখেও পুলিশকে না জানানো। এতে চোর আরো বেশি চুরি করতে উৎসাহ পায়। আমাদের সমাজে অনেক সময় আমরা দেখি মানুষ অন্যায় দেখেও চুপ করে থাকে, ভাবে ‘আমার কি, আমার সাথে তো হয়নি’। কিন্তু এই চিন্তা ভুল। কারণ আজ অন্য কারো সাথে অন্যায় হলে, কাল আমার সাথেও হতে পারে। তাই সবাই মিলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো খুবই জরুরি। ক্ষমা করা ভালো, কিন্তু সব সময় ক্ষমা করা ঠিক না। যদি কেউ ভুল করে, আর আমরা তাকে ক্ষমা করে দিই, সে আবার ভুল করবে। যেমন কেউ যদি একবার চুরি করে ধরা পড়ে, আর তাকে শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে সে আবার চুরি করবে। তাই অন্যায়কারীকে শাস্তি দিতে হবে, তাকে বুঝতে হবে অন্যায় করার খারাপ ফল আছে। আমাদের ছোটবেলা থেকেই শেখানো উচিত কি ভালো আর কি খারাপ। বাবা-মা, শিক্ষকরা আমাদের শেখান যে অন্যায় করা উচিত না। কিন্তু শুধু অন্যায় না করলেই হবে না, অন্যায় হতে দেয়াও উচিত না। আমরা যদি কাউকে অন্যায় করতে দেখি, আমাদের উচিত তাকে বাধা দেয়া, বড়দের জানানো। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব। কারণ আমরা যদি সবাই মিলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াই, তাহলে সমাজে অন্যায় কমবে। আমাদের দেশে, আমাদের সমাজে শান্তি বজায় রাখতে হলে এই বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কবি খুব ভালো বলেছেন, “অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে”। এর মানে হলো, যে অন্যায় করে আর যে অন্যায় সহ্য করে – দুজনকেই আমরা যেন ঘৃণা করি, যেন তাদের এই অন্যায়ের জন্য তারা লজ্জা পায়। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, ন্যায়ের পথে চললে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে সমাজ ভালো থাকবে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে একটি সুন্দর, ন্যায়নিষ্ঠ সমাজ গড়ে তুলতে পারব, যেখানে সবাই সুখে শান্তিতে থাকতে পারবে। এটাই আমাদের সবার কামনা হওয়া উচিত।

Related Posts

Leave a Comment