৮ম শ্রেণির বাংলা তৃতীয় অধ্যায়ের বিবরণমূলক লেখা হায়াৎ মামুদের রবীন্দ্রনাথ। গল্পটি রূপকথামূলক এবং আত্মজীবনীমূলক। এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শৈশবকাল ও তাঁর জীবনযাত্রার একটি চিত্র তুলে ধরে। এই পোস্টে রবীন্দ্রনাথ হায়াৎ মামুদ মূলভাব – ৮ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।
Table of Contents
রবীন্দ্রনাথ হায়াৎ মামুদ মূলভাব
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ১৮৬১ সালের ৭ মে, কলকাতায়। সে সময় কলকাতার চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন—ট্রাম বা বাসের অভাব, শুধুমাত্র ঘোড়ায় টানা গাড়ি চলত রাস্তায়। শহরের রাস্তাগুলো ছিল ধূলোময়, এবং পুকুরের জলেও সূর্যের আলো পড়ত। বিকেলে অশ্বত্থ গাছের ছায়ায় বসে সূর্য ডুবে যাওয়ার দৃশ্য ছিল মনমুগ্ধকর। প্রাচীন কলকাতার মায়ায় তখনকার পরিবেশটা একেবারে আলাদা ছিল।
রবীন্দ্রনাথ জন্মেছিলেন জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে, যা ছিল তাঁর দাদা দ্বারকানাথ ঠাকুরের অতীতের বিলাসবহুল জীবনযাপনের চিহ্ন। সেই বাড়িতে ছিল এক বিশাল প্রাসাদ, পুরনো ঐতিহ্য, এবং নানা স্মৃতি। কিন্তু শিশু রবীন্দ্রনাথের জীবন ছিল একাকী। তাঁর মা অসুস্থ থাকায়, তিনি স্নেহের অভাবে বড় হচ্ছিলেন। বাবা, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, সব সময় ব্যস্ত থাকতেন, তাই পরিবারের সদস্যদের কাছে খুব একটা গুরুত্ব পেতেন না। চোদ্দ ভাই-বোনের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে ছোট, ফলে পরিবারের অন্যান্যদের স্নেহ তাঁর কাছে দুষ্কর ছিল।
বাড়ির পুরনো দাসদাসীরা ছিলেন তাঁর সঙ্গী। তিনকড়ি দাসী, শঙ্করী, প্যারী—এঁরাই ছিলেন রবীন্দ্রনাথের আশ্রয়। রাতে দাসীরা তাঁকে রূপকথা বলতেন। আর তিনি সেই গল্পগুলো শুনে নিজেকে ভাসিয়ে দিতেন। কিন্তু যত বড় হতে থাকলেন, ততই যেন সংসারের কঠোরতা তাঁকে গ্রাস করতে লাগল।
ছেলেবেলা কাটল সীমাবদ্ধতার মধ্যে। খুব কম কাপড় ছিল, আর প্রচণ্ড শীতে তিনি কখনও মোজা পরতেন না। সকালে ভোরে উঠে কুস্তি লড়তে যেতে হত, তার পর স্কুলের পড়াশোনা। নিয়মিত পড়াশোনার মধ্যে মন খারাপ করলেও, বিজ্ঞান শেখার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল প্রবল। ছোটবেলা থেকেই তিনি বুঝতে পারতেন, জ্ঞান এবং প্রকৃতির মধ্যে এক অসীম রহস্য রয়েছে।
স্কুলে পড়ার সময় অনেক সময় ঘুম আসত। কিন্তু বড় দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ তাঁকে দেখে ছুটি দিয়ে দিতেন। এভাবে রবীন্দ্রনাথের ছোটবেলার দিনগুলো কাটছিল। সবসময় কিছু নতুন কিছু করার চেষ্টা করতেন তিনি। তাঁর মনে নতুন কিছু আবিষ্কারের ইচ্ছা ছিল, যা তাঁর জীবনকে অন্য এক রূপে সাজাতে সক্ষম হবে।
রবীন্দ্রনাথের শৈশবের জীবন অনেক দিক থেকেই তাঁকে গড়ে তুলেছে। তাঁর সেই নির্জনতাময় অভিজ্ঞতা, একাকীত্ব, আর সৃজনশীলতা—এসবই পরবর্তী সময়ে তাঁর সাহিত্যকর্মে দেখা যায়। তাঁর কবিতা, গান এবং নাটকে সেই সময়ের স্মৃতি ও অনুভূতিগুলো প্রবাহিত হয়ে আছে। আজও সেসব পাঠককে ভাবায়, মুগ্ধ করে। রবীন্দ্রনাথের জীবন যেন এক প্রতীক—মানবিকতা, সৃজনশীলতা এবং অনুসন্ধিৎসার এক অমলিন চিত্র।
রবীন্দ্রনাথ হায়াৎ মামুদ মূলভাব ছোট করে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ১৮৬১ সালের ৭ মে, কলকাতায়, একটি ঐতিহ্যবাহী এবং সমৃদ্ধ পরিবারের মধ্যে। তখনকার কলকাতার দৃশ্য ছিল চিত্রবহুল—কাঁচা রাস্তা, পুকুরে সূর্যের আলো, এবং পুরনো প্রাসাদ। তাঁর দাদার, দ্বারকানাথ ঠাকুরের, সময়ে প্রাসাদটি গড়ে উঠেছিল, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা পরিবর্তিত হয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথের শৈশব কাটে অনেকটা একাকী। মা অসুস্থ ছিলেন, আর বাবা কাজের কারণে সদা ব্যস্ত। ফলে, তিনি স্নেহ-যত্নের অভাবে বড় হচ্ছিলেন। বাড়ির দাসী, দাদীরা তাঁর একমাত্র সঙ্গী ছিল। শৈশবের স্মৃতিতে তাঁর মনে পড়ে, রাতের অন্ধকারে দাসীরা গল্প বলতো এবং তিনি শোনার চেষ্টা করতেন। বাড়ির জীবন ছিল কঠোর। নিয়মমাফিক পড়াশোনা, কুস্তি, আর খেলাধুলার মাধ্যমে তাঁর দিন কেটেছে। স্কুলের পড়াশোনা কখনো মনে হত চাপের, কখনো আবার বিজ্ঞান এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে তিনি আগ্রহী হতেন। বিশেষ করে বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর আকর্ষণ ছিল। নরকঙ্কাল এবং বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি জীবনের নানা দিক সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করতেন। তাঁর ছেলেবেলার চিত্রণ, একদিকে যেমন অভিজাত জীবনযাপনের প্রতিনিধিত্ব করে, অন্যদিকে তেমনই কঠোরতা এবং একাকীত্বও ফুটিয়ে তোলে। রবীন্দ্রনাথের শৈশবের অভিজ্ঞতা, পরবর্তী সময়ে তাঁর কবিতা, গান এবং সাহিত্যকর্মের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। তিনি তাঁর লেখায় সেই সময়ের স্মৃতি ও অনুভূতিগুলোকে একেবারে জীবন্তভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
আরও পড়ুনঃ রবীন্দ্রনাথ হায়াৎ মামুদ প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৮ম শ্রেণির বাংলা
Related Posts
- আমার বাড়ি কবিতার মূলভাব, প্রশ্ন উত্তর ও বহুনির্বাচনি – ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা
- অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস ২০২৪ PDF সহ সকল বিষয়
- Have You Filled a Bucket Today Class 7 English Chapter 5 (বাংলা অর্থসহ)
- ৮ম শ্রেণির বিজ্ঞান অনুশীলন ১ম অধ্যায় (যাযাবর পাখিদের সন্ধানে)
- ইসলাম শিক্ষা ৮ম শ্রেণি ২য় অধ্যায় -ইবাদাত (সব ছকের সমাধান)