জসীমউদ্দীনের ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতাটির মধ্যে কবি তার মনের গভীর এক অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। তিনি পল্লি-দুলালের দেশে যেতে চান, যেখানে প্রকৃতি, নদী, মাঠ, বাগান, ফুল, পাখি—সব কিছু মিলে একটি নিখুঁত শান্তির পরিবেশ তৈরি করে। কবি সেখানে গাঁয়ের জীবন উপভোগ করতে চান, যেখানে ছোট ছোট সুখের মুহূর্তগুলি ছড়িয়ে থাকে। এই পোস্টে যাব আমি তোমার দেশে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর লিখে দিলাম।
Table of Contents
যাব আমি তোমার দেশে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। শহরের দুই বন্ধু শফিক ও আশিক পরিকল্পনা করে এবার গ্রীষ্মের ছুটিতে তাদের গ্রমের বন্ধু শাহেদের বাড়িতে যাবে। তারা কখনো গ্রাম দেখেনি। বইয়ের পাতায় আর টেলিভিশনে দেখেছে বহুবার, ভালোও লেগেছে কিন্তু সশরীরে যাওয়া হয়নি কখনো। তাই এ সুযোগ তারা কিছুতেই হাতছাড়া করবে না। তাদের ভালোলাগা আরো শতগুণ বেড়ে গেছে শাহেদ যখন নিজ গ্রামের বন-বনানী, ফুল, পাখি, দিঘি, শাপলা, মেঠো পথ, ছেলেমেয়েদের দুরন্তপনা ইত্যাদির নয়নাভিরাম বর্ণনা তাদের শুনিয়েছে। ক. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতাটি কে লিখেছেন? খ. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় গ্রাম্য মেয়ে কেমন করে চলে? গ. উদ্দীপকে শহুরে দুই বন্ধুর গ্রাম দেখার যে ব্যাকুলতা প্রকাশ পেয়েছে তোমার পাঠ্য পুস্তকের কোন কবিতায় এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ পেয়েছে- ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকে শাহেদ তার গ্রামের যে নয়নাভিরাম বর্ণনা করেছেন ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার আলোকে তার বর্ণনা দাও। |
উত্তরঃ
ক. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতাটি জসীমউদ্দীন লিখেছেন।
খ. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় গ্রাম্য মেয়ে সরু, বাঁকা পথ দিয়ে চলে। তার পা যেন মাটির সাথে মিশে, তার সাথে ছড়িয়ে পড়ে কদম ফুলের সুগন্ধ। মেয়েটি খুবই স্বাভাবিকভাবে, একদম গাঁয়ের পথে হাঁটতে থাকে। তার চলার মধ্যে রয়েছে এক প্রাকৃতিক শুদ্ধতা, যা শহরের মানুষের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়। কবি মেয়ে এবং গ্রাম্য পরিবেশের সহজ এবং সুন্দর দৃশ্য তুলে ধরেছেন।
গ. উদ্দীপকে শহুরে দুই বন্ধুর গ্রাম দেখার যে ব্যাকুলতা প্রকাশ পেয়েছে, তেমন অভিব্যক্তি ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় দেখা যায়। কবি শহরের একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেতে এবং গ্রাম্য প্রকৃতির সাথে একাত্ম হতে চান। কবিতায় তিনি গ্রামে যাওয়ার প্রতি এক গভীর আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, যেখানে পাখির ডাকে, বনের শাখায় হাজার রঙের ফুল ফুটে, নদীতে সাঁতার কেটে আনন্দ পাওয়া যায়। কবি শহরের কোলাহল থেকে দূরে, পল্লির সরলতা এবং প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান। কবি কল্পনা করেন, গ্রামে গিয়ে কদম কলি এবং বনের শাখায় খেলাধুলা করবেন, ধল-দীঘিতে সাঁতার কাটবেন এবং গ্রাম্য পথে হাঁটবেন। শহরের দুই বন্ধুরও গ্রামে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা একইভাবে তাদের মধ্যে প্রকাশ পায়, তারা কখনো গ্রাম দেখেনি, তবে সেখানে যাওয়ার জন্য তারা উদগ্রীব। এই কবিতার মাধ্যমে শহুরে জীবনের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পেয়ে গ্রামে ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ও প্রেম ফুটে ওঠে।
ঘ. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় শাহেদ তার গ্রামের প্রকৃতির এক অপূর্ব বর্ণনা দিয়েছে, যা শহুরে দুই বন্ধুর মনে গভীর আগ্রহ ও আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছে। কবি গ্রামকে এমন এক স্থান হিসেবে বর্ণনা করেছেন যেখানে প্রকৃতি পুরোপুরি জীবন্ত। সেখানে আকাশ, বনের শীর্ষে আকাশ, দিক-হারা মাঠ, এবং বেত-কেয়ার বনে ডাহুক ডাকার শব্দ পাখির মত সুন্দরভাবে শোনা যায়। গ্রামের পথগুলো সরু, বাঁকা এবং ধান-কাউনের ক্ষেতের ভেতর দিয়ে চলে গেছে। গ্রামে কদম কলি ছড়ানো মেয়ে হাঁটছে এবং সেই পথ ধরে কবি যেতে চান। কবির বর্ণনায় দীঘি, শাপলা, ফুলের গন্ধ, এবং মাটির সুগন্ধ সবকিছু যেন একত্রে মিলিত হয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য প্রকাশ করছে। কবি সেখানে দস্যি ছেলেদের সাথে খেলা করতে চান, দীঘির জলে সাঁতার কাটতে চান। তিনি গ্রামের নদী, মাঠ, বন, গাছের শাখায় সাঁজ-বাগান দেখতে চান। এছাড়াও, কবি গ্রামের মানুষের সঙ্গে সময় কাটাতে চান এবং তাদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠতে চান। গ্রাম্য জীবনের এই এক অসীম সৌন্দর্য কবির মনকে শান্তি দেয় এবং তিনি সেখানে যাওয়ার জন্য অস্থির। তাই উদ্দীপকে শাহেদ তার গ্রামের যে নয়নাভিরাম বর্ণনা করেছেন তা ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার সাথে মিল পাওয়া যায়।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। তুমি যাবে ভাই যাবে মোর সাথে, ছোট সে কাজল গাঁয়, গলাগলি ধরি কলা বন; যেন ঘিরিয়া রয়েছে তায়। সরু পথ খানি সুতায় বাঁধিয়া দূর পথিকেরে আনিছে টানিয়া। বনের হাওয়ায়, গাছের ছায়ায়, ধরিয়া রাখিবে তায়, বুকখানি তার ভরে দেবে বুঝি, মায়া আর মমতায়! ক. বেতস কেয়ার বনে আসর মাতায় কে? খ. কবি কোন পথ দিয়ে পল্লি-দুলালের দেশে যাবেন? গ. উদ্দীপকের সাথে তোমার পাঠ্যের কোন কবিতার সাদৃশ্য খুঁজে পাও এবং কেন? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকটির নিমন্ত্রণকারী যেন ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার পল্লি-দুলালের অনুরূপ।”- মতামত দাও। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। ওই যে দেখ নীল-নোয়ান সবুজ ঘেরা-গাঁ, কলার পাতা দোলায় চামর শিশির ধোয়ায় পা, সেথায় আছে ছোট কুটির সোনার পাতায় ছাওয়া, সাঁঝ আকাশের ছড়িয়ে-পড়া আবীর রঙে নাওয়া, সেই ঘরেতে একলা বসে ডাকছে আমার মা সেথায় যাব, ও ভাই এবার আমায় ছাড় না ক. কবি কার কাঁধে হাত রেখে উদাস বেশে ঘুরে বেড়াবেন? খ. ডাহুক মেয়ে কোথায় আসর মাতায় ? ব্যাখ্যা কর। গ. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের কবিতার সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার পুরো ভাবকে ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। ওই যে লাউয়ের জাংলা-পাতা ঘর দেখা যায় একটু দূরে কৃষক-বালা আসছে ফিরে নদীর পথে কলসি পুরে, ওই কুঁড়েঘর- উহার মাঝেই যে-চিরসুখ বিরাজ করে, নাইরে সে সুখ অট্টালিকায়, নাইরে সে সুখ রাজার ঘরে! কত গভীর তৃপ্তি আছে লুকিয়ে যে ওই পল্লি-প্রাণে, জানুক কেহ নাই বা জানুক- সে কথা মোর মনই জানে! ক. ‘ধল-দীঘি’ অর্থ কী? খ. “ধান-কাউনের ক্ষেতের ভেতর সরু সুতোর আঁচড় টানি”-ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকটি ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার সঙ্গে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “কত গভীর তৃপ্তি আছে লুকিয়ে যে ওই পল্লি-প্রাণে।” উদ্দীপকের এই চরণটি যেন ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার কবির গ্রামে ফেরার ব্যাকুলতাকেই তুলে ধরেছে।- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। আমার বাড়ির ডালিম গাছে ডালিম ফুলের হাসি, কাজলা দীঘির কাজল জলে হাঁসগুলি যায় ভাসি। আমার বাড়ি যাইও ভোমর, এই বরাবর পথ, মৌরী ফুলের গন্ধ শুঁকে থামিও তব রথ। ক. কবি জসীমউদ্দীনের গ্রামের নাম কী? খ. ফুলের মালা পেয়ে পল্লিবালা কী ভাববে? গ. উদ্দীপকে ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার কোন দিক ফুটে উঠেছে? ঘ. “উদ্দীপকটি ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার খন্ডাংশমাত্র।”- বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। শোন বন্ধু শোন, প্রাণহীন এক শহরের ইতিকথা, ইটের পাঁজরে লোহার খাঁচায় দারুণ মর্ম ব্যথা। এখানে আকাশ নেই, এখানে বাতাস নেই এখানে অন্ধ গলির নরকে মুক্তির আকুলতা। ক. কবি জসীমউদ্দীন কী নামে খ্যাত? খ. কবি কাদের মেঘ-কনে বলে সম্বোধন করেছেন? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকটির সাথে ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার বৈসাদৃশ্য লেখ। ঘ. “উদ্দীপকের মুক্তির আকুলতাটি কবিকে গ্রামের প্রতি আকৃষ্ট করেছে।”- যথার্থতা নিরূপণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর/লও যত লৌহ লোস্ট্র কাষ্ঠ ও প্রস্তর হে নবসভ্যতা। হে নিষ্ঠুর সর্বগ্রাসী / দাও সেই তপোবন পুণ্যচ্ছায়ারাশি, গ্লানিহীন দিনগুলি, সেই সন্ধ্যায়ান/সেই গোচারণ, সেই শান্ত সামগান। ক. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতায় কবি কার দেশে যেতে চান? খ. ‘দীঘল বাঁকা পন্থখানি’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? গ. ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকটির সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকের কবির আকাঙ্ক্ষার সাথে ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষা কতটা একীভূত? মতামত দাও। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। আমার গ্রাম আমাকে আজীবন আকর্ষণ করেছে। বাংলাদেশ চিরহরিতের দেশ। তবু মনে হয়, আমার গ্রামের গাছপালা লতাপাতার মধ্যে কোথায় যেন আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। ভাওয়াল পরগনায় অবস্থিত আমাদের গ্রামটি বর্ষাকালে দুভাগে বিভক্ত হয়ে যায়, পশ্চিম ভাগটি হয়ে যায় একটি বিচ্ছিন্ন ছোটো দ্বীপ। পশ্চিম অংশেই আমাদের ভিটেবাড়ি। গ্রামের পশ্চিমে বিশাল মাঠ। বর্ষায় বিরাট বেলাই বিলের সঙ্গে মিশে যায়। বেলাই বিল প্রকৃতপক্ষে একটি মস্ত বড়ো হাওড়-শীতকালে বোরো ধান হয়। ক. কোন ফুলের রূপ দেখে কবি তাকে বিয়ের কনে মানবেন? খ. “কোথাও সিঁধে কোথাও বাঁকা গরুর গায়ের রেখায় ক্ষত”-কীসের কথা বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের সাথে তোমার পাঠ্য ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার সাদৃশ আলোচনা কর। ঘ. উদ্দীপকটি ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতাটিকে কতটা প্রতিনিধিত্ব করে? মতামত ব্যক্ত কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। অপু জন্মিয়া অবধি কোথাও কখনো যায় নাই। এ গাঁয়েরই বকুলতলা, গোঁসাইবাগান, চালতেতলা, নদীর ধার, বড়ো জোর নবাবগঞ্জ যাইবার পাকা সড়ক- এই পর্যন্ত তাহার দৌড়। মাঝে মাঝে বৈশাখ কি জ্যৈষ্ঠ মাসে খুব গরম পড়িলে বৈকালে দিদির সঙ্গে নদীর ঘাটে গিয়া দাঁড়াইয়া থাকিত। আজ সেই অপু সর্বপ্রথম গ্রামের বাহিরে পা দিল। কয়েকদিন হইতেই উৎসাহে তাহার রাত্রিতে ঘুম হওয়া দায় হইয়া পড়িয়াছিল। দিন গনিতে গনিতে অবশেষে যাইবার দিন আসিয়া গেল। ক. কবি কাদের সাথে দল বেঁধে খেলতে চান? খ. কবি ফুলের মালা গেঁথে কী করবেন?- বর্ণনা কর। গ. উদ্দীপকটি ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকের ‘অপু’ ‘যাব আমি তোমার দেশে’ কবিতার পল্লি-দুলালের প্রতিনিধিত্ব করে কি? যুক্তিসহকারে মতামত দাও। |
নিচে উত্তরসহ যাব আমি তোমার দেশে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।
যাব আমি তোমার দেশে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ
আরও পড়ুনঃ আমার দেশ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর