‘বৃষ্টি’ কবিতাটি ফররুখ আহমদের কৃষিপ্রধান বাংলার বহুপ্রতীক্ষিত বৃষ্টি নিয়ে কবিতাটি লিখিত। প্রকৃতিতে বর্ষা আসে প্রাণস্পন্দন নিয়ে। আর বৃষ্টিই বর্ষার প্রাণ। এই পোস্টে বৃষ্টি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।
Table of Contents
বৃষ্টি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন] কেউবা রঙিন কাঁথায় মেলিয়া বুকের স্বপনখানি, তারে ভাষা দেয় দীঘল সুতায় মায়াবী আখর টানি। আজিকে বাহিরে শুধু ক্রন্দন ছলছল জলধারে বেণু-বনে বায়ু নাড়ে এলোকেশ, মন যেন চায় কারে। ক. ‘বৃষ্টি’ কবিতায় কোন কোন নদীর কথা উল্লেখ রয়েছে? খ. রৌদ্র-দগ্ধ ধানক্ষেত আজ বৃষ্টির স্পর্শ পেতে চায় কেন? গ. উদ্দীপকের শেষ পঙ্ক্তিটির সঙ্গে ‘বৃষ্টি’ কবিতার মিল কতটুকু তা ব্যাখ্যা কর। ঘ. ‘উদ্দীপকটি ‘বৃষ্টি’ কবিতার একটা বিশেষ ভাব প্রকাশ করে মাত্র, সমগ্র ভাব নয়”- তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও ৷ |
উত্তরঃ
ক. ‘বৃষ্টি’ কবিতায় পদ্মা ও মেঘনা নদীর কথা উল্লেখ রয়েছে।
খ. গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে এবং ফসলের সম্ভারে ভরিয়ে দিতেই রৌদ্র-সন্ধ ধানখেত আজ বৃষ্টির স্পর্শ পেতে চায়।
গরমের তাপে বাংলাদেশের প্রকৃতি যেন জ্বলছে। গাছপালা, লতাপাতা ও খেতের ফসল দমে যাচ্ছে। তখন বৃষ্টি নামলে রোদে ঝিমিয়ে থাকা গাছপালা, লতাপাতা ও ধানখেত নতুন প্রাণ পায়। সবুজ ও পুষ্ট হয়ে আবার সতেজ হয়ে ওঠে। তাই রোদে শুকনো ধানখেত বৃষ্টির স্পর্শ পেতে চায়।
গ. উদ্দীপকের শেষ পঙ্ক্তিটির সঙ্গে ‘বৃষ্টি’ কবিতার শেষের চার চরণের মিল রয়েছে।
বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের মনও জাগে এক অদ্ভুত অনুভূতি। নতুন বৃষ্টির জল বন-বনানীকে ভিজিয়ে দেয় এবং মানুষের মনে গভীর ভাবনার স্রোত উদ্দীপ্ত করে। বৃষ্টির দিনে সংবেদনশীল মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে মিশে অনুভূতিতে ভাসে।
উদ্দীপকে বাংলাদেশের এক নিভৃত গ্রামের মানুষের বর্ষার দিনের চিত্র দেখানো হয়েছে। ঘন বর্ষণে পল্লিবধূরা একটু অবসর পায়, কেউ নকশিকাঁথায় গভীর অনুরাগে কাজ করে। বুকের মধ্যে থাকা স্বপ্ন যেন শব্দ পায়। বাইরে ঝরঝর বৃষ্টি হলে বাঁশবন নুয়ে পড়ে। এমন দিনে মানুষ প্রিয়জনের কথা মনে করে। ‘বৃষ্টি’ কবিতাতেও বর্ষার প্রথম অবিরল বৃষ্টিতে প্রকৃতি ও মানুষের অনুভূতির স্রোত ফুটে উঠেছে। বৃষ্টিতে তৃষিত বন-বনানি যেমন সতেজ হয়, তেমনি সংবেদনশীল মানুষও আনন্দে ভেসে ওঠে। তার মনে আসে সুখী অতীত স্মৃতি, আর ভালো লাগার অনুভূতি আঁকে মনে। তবে কখনও কখনও এই বৃষ্টি মনকে বিষণ্ণও করে, একাকী জীবনের বেদনা আরও বাড়িয়ে দেয়।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘বৃষ্টি’ কবিতার একটা বিশেষ ভাব প্রকাশ করে মাত্র, সমগ্র ভাব নয়- মন্তব্যটির সঙ্গে আমি একমত।
পল্লি প্রকৃতিতে বৃষ্টির ছোঁয়ায় যৌবনের প্রাণ ফুটে ওঠে। অবিরাম বর্ষণে মাঠ-ঘাট, খাল-বিল, নদী-নালা ভরে যায়। বিভিন্ন ফুলের রঙ ও গন্ধের উৎসবে বাংলার প্রকৃতি প্রাণবন্ত হয়। মানুষের হৃদয়ও যেন খুলে যায়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, ঘন বর্ষায় পল্লিবধূরা অবসর পেয়ে কেউ নকশিকাঁথায় গভীর অনুরাগে রঙিন ফুল বুনছে। বুকের মধ্যে লুকিয়ে থাকা স্বপ্ন যেন কথায় প্রকাশ পায়। বাইরে ঝরঝর বর্ষণ হচ্ছে। সেই বর্ষণে বাঁশবন নুয়ে পড়ছে। এমন দিনে প্রিয়জনের কথা মনে পড়ছে। ‘বৃষ্টি’ কবিতার শেষ চারটি লাইনের মধ্যেও এ বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
‘বৃষ্টি’ কবিতায় বাংলার সামগ্রিক জীবন ও প্রকৃতির চিত্র উঠে এসেছে। বৃষ্টিকে বহু প্রতীক্ষিত হিসেবে দেখানো হয়েছে। বর্ষার জল পদ্মা-মেঘনার দেশে প্রাণ জাগায়, আবাদি জমিতে গৌরবের ফসল ধরে। আকাশে মেঘ ও বিদ্যুতের রূপসী খেলা দেখা যায়। ফুল ফুটে প্রকৃতি মোহিত হয়। রুক্ষ মাটিও বৃষ্টিতে প্রাণ পায়। তবে উদ্দীপকে এমন বিস্তৃত চিত্র নয়; সেখানে বর্ষা ও মানবমনের একটি বিশেষ অনুভূতি দেখানো হয়েছে। তাই মন্তব্যটি যথার্থ।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [যশোর বোর্ড ২০১৭] মাদল বাজিয়ে এলো বাদল মেঘ এলোমেলো মাতলা হাওয়া এলো বনে। ময়ূরী নাচে কালো জামের গাছে পিয়া পিয়া বন পাপিয়া বেত-বনের আড়ালে ডাহুকী ডাকে ডাকে না এমন দিনে কেহ আমাকে, বেণীর বিনুনী খুলে পড়ে একলা মন টেকে না ঘরের কোণে। ক. কবি ফররুখ আহমদের কাব্যসৃষ্টির প্রেরণা কী ছিল? খ. বৃষ্টিকে ‘বহু প্রতীক্ষিত’ বলা হয়েছে কেন? গ. বেত-বনের আড়ালে ডাহুকী ডাকে ডাকে না এমন দিনে কেহ আমাকে- উদ্দীপকের এই বক্তব্যের সাথে ‘বৃষ্টি’ কবিতার সাদৃশ্য তুলে ধর। ঘ. উদ্দীপকের সাথে ‘বৃষ্টি’ কবিতার ভাবগত মিল থাকলেও গঠনগত মিল নেই- তোমার মতামতের সপক্ষে যুক্তি দাও। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [চট্টগ্রাম বোর্ড ২০১৭] কেউবা রঙিন কাঁথায় মেলিয়া বুকের স্বপনখানি, তারে ভাষা দেয় দীঘল সুতার মায়াবী আখর টানি। আজিকে বাহিরে শুধু ক্রন্দন ছলছল জলধারে, বেণু-বনে বায়ু নাড়ে এলোকেশ, মন যেন চায় কারে। ক. ফররুখ আহমদ কত সালে মৃত্যুবরণ করেন? খ. ‘বৃষ্টি’ কবিতায় ‘বিষণ্ণ মেদুর’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গ. উদ্দীপকে ‘বৃষ্টি’ কবিতার যে দিক ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকটি ‘বৃষ্টি’ কবিতার আংশিক প্রতিফলন মাত্র, বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [বরিশাল বোর্ড ২০১৬] গ্রীষ্মের দাবদাহ অশান্ত করে মন, তখনি জাগে ধরায় বৃষ্টির আগমন। প্রকৃতি চায় রূপ মাটি চায় সবুজ ………………… বৃষ্টি আসে আসুক। ক. ‘সাত সাগরের মাঝি’ কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা কে? খ. ‘বৃষ্টি’ কবিতায় আকাশকে ‘বিদগ্ধ আকাশ’ বলা হয়েছে কেন? গ. উদ্দীপকে ‘বৃষ্টি’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে- তা ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘বৃষ্টি’ কবিতার আংশিক ভাব ধারণ করেছে”- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। [যশোর বোর্ড ২০১৫] ‘গুরু গুরু ডাকে মেঘ ঘনঘটা চারিদিকে আজ টুপটাপ বৃষ্টি ঝরে অঝোর ধারায় নিজেকে হারিয়ে খুঁজি কিছু নাহি পাই খুলেছি হৃদয় বাতায়ন ফেলে সব কাজ।’ ক. নদীর ফাটলে পূর্ণ প্রাণের জোয়ার কে আনে? খ. ‘বিদ্যুৎ-রূপসী পরী’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? গ. “খুলেছি হৃদয় বাতায়ন ফেলে সব কাজ”- উদ্দীপকের এ বক্তব্যের সাথে ‘বৃষ্টি’ কবিতার মিল কিসে? ব্যাখ্যা দাও। ঘ. উদ্দীপকটি ‘বৃষ্টি’ কবিতার মূলভাবের প্রতিনিধিত্ব করছে- মূল্যায়ন কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। কঠোর হিমের বিরহী পাথার একাকিনী নিশি জাগি- গনিয়াছে দিন নিরজনে বদি নয়ন বসনে ঢাকি। তাঁন জাগিয়াছে মুখ চাহি আর নিবিদ্ধ ব্যথায় ছেয়েছে আধার উতল পবন দিয়ে গেছে দোল ব্যাকুলিয়া সারা মন নয়নে ঝরেছে বেদনা শিশির নিশি ভরি সারাক্ষণ। ক. ফররুখ আহমদ মরণোত্তর কোন পুরস্কারে ভূষিত হন? খ. ‘তৃষিত বনের সঙ্গে জেগে ওঠে তৃষাতপ্ত মন’- ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপক কবিতাংশটির সঙ্গে ‘বৃষ্টি’ কবিতার বৈসাদৃশ্য আলোচনা কর। ঘ. উদ্দীপকটি ‘বৃষ্টি’ কবিতার মূলভাবকে কতটুকু ধারণ করে? যৌক্তিক বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে অসহ্য জনজীবন। কৃষক মাঠে চাষ দিতে পারছে না, তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে কখন বৃষ্টি নামবে তার প্রতীক্ষায়। দিগন্তজুড়ে ফসলের ধূসর মাঠ, দগ্ধ হচ্ছে আকাশ থেকে ঝরে পড়া তীব্র আগুনে। স্তব্ধ প্রকৃতির সঙ্গে মানবও দিন গুনছে বৃষ্টির প্রতীক্ষায়। ক. বৃষ্টির দিনে কে শিহরায়? খ. রৌদ্রদগ্ধ ধানখেত আজ বৃষ্টির স্পর্শ পেতে চায় কেন? গ. উদ্দীপকে ‘বৃষ্টি’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? বর্ণনা কর। ঘ. ‘স্তব্ধ প্রকৃতির সঙ্গে মানবও দিন গুনছে বৃষ্টির প্রতীক্ষায়।’- উক্তিটি ‘বৃষ্টি’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। জল ছল ছল করে আড়া ভাঙে ভাসানো পুকুর থেকে কই মাছ ওঠে কান বেয়ে হেঁটে যায় জলভরা মাঠে, তুমি না জানলেও এ তল্লাটে সবাই যা জানে ছেলেবেলা থেকে। ক. কোন ছায়ায় মাঠ ঢেকে যায়? খ. বর্ষণমুখর দিন বলতে কী বোঝ? গ. উদ্দীপকটিতে ‘বৃষ্টি’ কবিতার কোন দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘বৃষ্টি’ কবিতার একাংশের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে, পুরো অংশ প্রতিফলিত হয়নি। মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর ৷ |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। “বাহিরে নাচিছে ঝর ঝর জল, গুরু গুরু মেঘ ডাকে এসবের মাঝে রূপকথা যেন আর রূপকথা আঁকে। ] যেন ও বৃদ্ধ, গাঁয়ের চাষিরা, আর ওই রূপকথা, বাদলের সাথে মিশিয়া গড়িছে আরেক কল্পলতা।” ক. রুক্ষ মাঠ কীসের সুর শোনে? খ. অরণ্যের কেয়া কেন শিহরায়? ব্যাখ্যা কর। গ. ‘বৃষ্টি’ কবিতা ও উদ্দীপকের মধ্যে বৈসাদৃশ্য কোথায়? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকে বর্ষার আবহ থাকলেও তা ‘বৃষ্টি’ কবিতার মূলভাবকে স্পর্শ করতে পারেনি।” মন্তব্যটি বিচার কর। |
নিচে উত্তরসহ বৃষ্টি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।
বৃষ্টি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পিডিএফ
আরও পড়ুনঃ সেই দিন এই মাঠ সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলা