আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর ‘একুশের গান’ কবিতাটিতে অন্যায়ভাবে গুলিবর্ষণকারী তৎকালীন পাকিস্তানি শোষকদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির জাগ্রত প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে। এই পোস্টে একুশের গান কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ৮ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।
Table of Contents
একুশের গান কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন] ‘ওরা কেড়ে নিতে চায় বুকের স্বপ্ন, মায়ের মুখের ভাষা ঝরিয়ে রক্ত, ভাইয়ের প্রাণ, হৃদয়ের ভালোবাসা। জেগে উঠো আজ সাহসী যৌবন, আনো নব উত্থান দ্রোহের আগুনে পোড়াও ওদের, গাও বিজয় গান।’ ক. ‘একুশের গান’ কবিতাটি কোন শহিদের স্মরণে লেখা হয়েছে? খ. ‘সেই আঁধারের পশুদের মুখ চেনা’- চরণটি ব্যাখ্যা কর। গ. দ্বিতীয় উদ্দীপকের আলোকে ‘একুশের গান’ কবিতায় বর্ণিত ‘ওরা এদেশের নয়’- চরণটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. প্রথম উদ্দীপকের যিনি অভিযাত্রিক তিনিই ‘একুশের গান’ কবিতার ভাষা-শহিদ- বিশ্লেষণ কর। |
উত্তরঃ
ক. একুশের গান’ কবিতাটি ভাষাশহিদের স্মরণে লেখা হয়েছে।
খ. ‘সেই আঁধারের পশুদের মুখ চেনা’ চরণটিতে কবি পাকিস্তানি সেনাদের কথা বলেছেন।
১৯৪৮ সালে যখন বাংলার পরিবর্তে শুধু উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করা হয়, তখনই বাঙালির মনে আঘাত লাগে। তারা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ শুরু করে এবং বাংলা ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলন ধীরে ধীরে বড় আকার নেয় এবং ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি তা তীব্র রূপ পায়। সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়, এতে অনেকেই শহিদ হন। তাই কবি সেই শত্রুদের ‘অন্ধকারের পশু’ বলেছেন, যাদের বাঙালি জাতি ভালো করেই চেনে।
গ. দ্বিতীয় উদ্দীপকের আলোকে বলা যায় ‘একুশের গান’ কবিতায় বর্ণিত ‘ওরা এদেশের নয়’ চরণটি উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এই দিনে বাঙালি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে এবং ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে বাংলার বীর সন্তানরা।
দ্বিতীয় উদ্দীপকে বলা হয়েছে পাকিস্তানি শাসকদের কঠোর অত্যাচার ও নির্যাতনের কথা। তারা বাঙালির ভাষার ওপর আঘাত করে বাঙালির স্বপ্ন কেড়ে নিতে চেয়েছে। নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে বাঙালি সন্তানদের। তাঁদের রক্তে ভেসে গেছে রাজপথ। ‘একুশের গান’ কবিতায় কবি বলেছেন, “ওরা” এদেশের নয়। উদ্দীপকের “ওরা” এবং কবিতার “ওরা” একই—পাকিস্তানি শাসকরা। তারা এদেশের মানুষকে হত্যা করেছে, কারণ তারা এদেশের নয় এবং নির্বিকার মনে রক্ত ঝরিয়েছে। তাই বলা যায়, দ্বিতীয় উদ্দীপক ও কবিতার এই চরণের মধ্যে মিল রয়েছে।
ঘ. প্রথম উদ্দীপকের যিনি অভিযাত্রিক তিনিই ‘একুশের গান’ কবিতার ভাষা-শহিদ- মন্তব্যটি যথার্থ।
জাতীয় জীবনে বিশেষ মর্যাদা আনতে অমর একুশের অবদান অপরিসীম। বিশ্বে সাহসী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য এই দিনের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি।
উদ্দীপকে একদল দুঃসাহসিক অভিযাত্রীর কথা বলা হয়েছে। তারা সব বাধা অতিক্রম করে সামনে এগোয়। তারা নির্ভীক, সাহসী, তরুণ ও প্রাণবন্ত। তাদের চলার শেষ নেই। এই অভিযাত্রীরা ‘একুশের গান’ কবিতার ভাষাশহিদদের মতো। কারণ তারা পাকিস্তানিদের গুলির ভয় উপেক্ষা করে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে লড়েছে। পাকিস্তানিদের কঠোর আচরণ তাদের আন্দোলন থামাতে পারেনি। আত্মত্যাগের মাধ্যমে তারা বাংলা ভাষার অধিকার অর্জন করেছে।
ভাষাশহিদরা সাহসী ও জাতির গর্ব। তাঁদের আত্মত্যাগেই বাংলা আজ রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেয়েছে। পাকিস্তানি পুলিশের বাধার মুখেও তারা জীবন বাজি রেখে এগিয়েছে। উদ্দীপকের অভিযাত্রিক দলের মধ্যেও সেই সাহস দেখা গেছে। তাই বলা যায়, প্রথম উদ্দীপকের অভিযাত্রীই ‘একুশের গান’ কবিতার ভাষাশহিদ এই মন্তব্য সঠিক।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [জে. এস. সি. পরীক্ষা ঢাকা বোর্ড ২০১৯] ওরা কেড়ে নিতে চায় বুকের স্বপ্ন, মায়ের মুখের ভাষা ঝরিয়ে রক্ত, ভাইয়ের প্রাণ, হৃদয়ের ভালোবাসা জেগে উঠো আজ সাহসী যৌবন, আনো নব উত্থান স্নেহের আগুনে পোড়াও ওদের, গাও বিজয়ের গান। ক. ‘একুশের গান’ কবিতায় উল্লিখিত কোথায় বীর ছেলে বীর নারী মারা যায়? খ. ‘শিশুহত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা’- ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকটিতে ‘একুশের গান’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘একুশের গান’ কবিতার সমগ্র ভাব ধারণ করেনি।”- মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [জে. এস. সি. পরীক্ষা সিলেট বোর্ড ২০১৮] ধন্য সবাই ধন্য অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে মাতৃভূমির জন্য ধরল যারা জীবন বাজি হলেন যারা শহিদ গাজি লোভের টানে হয়নি যারা ভিনদেশিদের পণ্য। ক. ফেব্রুয়ারিকে ‘অশ্রু-গড়া’ বলা হয়েছে কেন? খ. “এমন সময় ঝড় এলো এক, ঝড় এলো ক্ষ্যাপা বুনো।” চরণটি ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকে ‘একুশের গান’ কবিতার প্রতিফলিত দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকটি ‘একুশের গান’ কবিতার বিষয়বস্তুকে পুরোপুরি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে কি? তোমার যুক্তিপূর্ণ মতামত তুলে ধর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। [জে. এস. সি. পরীক্ষা কুমিল্লা বোর্ড ২০১৯] বখাটে ছেলেদের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। কিন্তু সাহস করে কেউ কিছু বলে না। একদিন কলেজছাত্র সাদমান একাই রুখে দাঁড়ায়, প্রতিবাদ করে। এতে বখাটেরা সাদমানকে মারধর করতে থাকে। যে এলাকাবাসী এতদিন ভয়ে সব অত্যাচার নীরবে সহ্য করেছে, তারাই প্রতিবাদী সাদমানের উপর এ অত্যাচারে যেন ক্ষিপ্ত হয়ে একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে বখাটেদের ওপর। তারা বখাটেদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ক. ‘অলকানন্দা’ কী? খ. ফেব্রুয়ারিকে ‘মায়ের অশ্রু-গড়া’ বলা হয়েছে কেন? গ. উদ্দীপকের বখাটেরা ‘একুশের গান’ কবিতার কাদের প্রতিনিধিত্ব করে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের এলাকাবাসীর জাগরণই ‘একুশের গান’ কবিতার প্রত্যাশা”- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। [জে. এস. সি. পরীক্ষা চট্টগ্রাম বোর্ড ২০১৫] হয় ধান নয় প্রাণ- এ শব্দে সারা দেশ দিশাহারা, একবার মরে ভুলে গেছে আজ মৃত্যুর ভয় তারা। শাবাশ বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয় জ্বলে-পুড়ে-মরে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়। ক. ‘একুশের গান’ কবিতাটি পাঠ করে শিক্ষার্থীরা কী নিয়ে গর্ব করতে শিখবে? খ. কবিতায় পশু বলা হয়েছে কাদের এবং কেন? গ. উদ্দীপকটি ‘একুশের গান’ কবিতার কোন দিকটির ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকের ‘তারা’ ‘একুশের গান’ কবিতার ভাষাশহিদের প্রতিরূপ।– যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। ছাত্রছাত্রীরা পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদ জানাবার জন্যে শান্তিপূর্ণভাবে পরিষদ ভবনের দিকে যাবার চেষ্টা করে। পুলিশ কোনোরূপ সতর্ক করে না দিয়ে হঠাৎ মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের সামনে কয়েক দফা গুলি চালনা করে। প্রথম দফা গুলিতে রফিকউদ্দিন ও জব্বার এবং দ্বিতীয় দফা গুলিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবুল বরকত শহিদ হন। ক. ‘একুশের গান’ কবিতায় কোন ফুলের কথা বলা হয়েছে? খ. ‘দারুণ ক্রোধের আগুনে আবার জ্বালব ফেব্রুয়ারি’- এ ক্রোধের কারণ কী? গ. উদ্দীপকে ‘একুশের গান’ কবিতার কোন দিকটির চিত্র ফুটে উঠেছে? ঘ. “উদ্দীপকটি ‘একুশের গান’ কবিতার মূলভাবকে ধারণ করে।”- বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। আর তপুর হাতে ছিল একটি মস্ত প্ল্যাকার্ড। তার ওপর লাল কালিতে লেখা ছিলো, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই। মিছিলটা হাইকোর্টের মোড়ে পৌছুতে অকস্মাৎ আমাদের সামনের লোকগুলো চিৎকার করে পালাতে লাগলো চারপাশে। ব্যাপার কী বুঝবার আগেই চেয়ে দেখি, প্ল্যাকার্ডসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে তপু। কপালের ঠিক মাঝখানটায় গোল একটা গর্ত। আর সে গর্ত দিয়ে নির্ঝরের মতো। রক্ত ঝরছে তার। ক. আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? খ. কবি একুশে ফেব্রুয়ারিকে ভুলতে পারেন না কেন? গ. উদ্দীপকের তপুর মধ্যে ‘একুশের গান’ কবিতার প্রতিফলিত দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. “শোষকের বর্বরতার বিষয়টির প্রতিফলন উদ্দীপক ও ‘একুশের গান’ কবিতায় যথার্থভাবে হয়েছে।” বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। মাগো, ওরা বলে সবার কথা কেড়ে নেবে তোমার কোলে শুয়ে গল্প শুনতে দেবে না। বলো, মা তাই কি হয়? তাইতো আমার দেরি হচ্ছে। তোমার জন্য কথার ঝুরি নিয়ে তবেই না বাড়ি ফিরব। ক. ‘একুশের গান’ কবিতাটি প্রথম কত খ্রিষ্টাব্দে ছাপা হয়? খ. কাদেরকে খুন করে মানুষের দাবি রোখে? বুঝিয়ে দাও। গ. উদ্দীপকের কবিতাংশটি ‘একুশের গান’ কবিতার কোন দিকটিকে নির্দেশ করছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকটির মূলভাব ‘একুশের গান’ কবিতার মূলভাবকে প্রতিফলিত করেছে”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। |
নিচে উত্তরসহ একুশের গান কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।
একুশের গান কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ
আরও পড়ুনঃ
- জাগো তবে অরণ্য কন্যারা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
- প্রার্থী কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
- নদীর স্বপ্ন কবিতার সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর