আহসান হাবীবের ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় জন্মভূমির সঙ্গে মানুষের আজীবনের সম্পর্ক। এর সবকিছুই তার মনে হয় কত চেনা, কত জানা। জন্মভূমির মধ্যে শিকড় গেড়ে থেকেই মানুষ তাই সমগ্র দেশকে আপন করে পায়। এই অনুভূতি তুলনাহীন। এই পোস্টে আমি কোনো আগন্তুক নই সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলা লিখে দিলাম।
Table of Contents
আমি কোনো আগন্তুক নই সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ১। [বোর্ড বইয়ের প্রশ্ন] আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ খেত ভালোবেসে জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলার এ সবুজ করুণ ডাঙায়; হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে; হয়তো শুনিবে এক লক্ষ্মীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে; হয়তো খইয়ের ধান ছড়াইতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে; রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক সাদা ছেঁড়া পালে ডিঙা বায়; রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে দেখিবে ধবল বক; আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে। ক. বিস্তর জোনাকি কোথায় দেখা যায়? খ. ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’- কবি একথা বলেছেন কেন? গ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা চিত্রের সাথে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার চেতনাগত বৈসাদৃশ্যই বেশি।”- যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর। |
উত্তরঃ
ক. রাতের বেলা বাঁশবাগানে বিস্তর জোনাকি দেখা যায়।
খ. ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’- কবি এ কথা বলেছেন জন্মভূমির প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ ও নিবিড় বন্ধনের বিষয়টি বোঝানোর জন্য।
‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি জন্মভূমির সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রকাশ করেছেন। কবির কাছে দেশ মানে শুধু চারপাশের প্রকৃতি নয়, তাকে নিজের অন্তরাত্মায় অনুভব করা। তিনি গ্রামীণ পরিবেশে বড় হয়েছেন। গ্রামের মাঠ-ঘাট, খেতের সরু পথ, ধানখেত, নদীর কিনার, জনপদের মানুষজন সবই তাঁর কাছে অতি পরিচিত। এদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গভীর এবং নিবিড়। তাই কবি নিজেকে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ বলে অভিহিত করেছেন।
গ. উদ্দীপকে ফুটে ওঠা চিত্রের সাথে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার সাদৃশ্যের দিকটি হলো এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এক দেশ। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে দেশটিকে সাজিয়েছে। চারদিকে সবুজের ছায়া, সারি সারি গ্রাম, সর্পিল নদী, বিস্তৃত ফসলের মাঠ, বন-বনানী, পাখির কিচির-মিচির সব মিলিয়ে মনোমুগ্ধকর এক দৃশ্য।
উদ্দীপকে বাংলার সবুজ প্রকৃতির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসা ফুটে উঠেছে। কবি দেখিয়েছেন, জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলায় সন্ধ্যার বাতাসে গুবরে পোকার উড়ে যাওয়া, উঠানে শিশুর খইয়ের ধান ছড়িয়ে দেওয়া, নৌকা বাওয়া—এ সব বাংলার রূপময় প্রকৃতির অংশ। ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতাতেও অনুরূপ প্রকৃতির বর্ণনা আছে। জমিনের ফুল, জোনাকি, পুকুর, মাছরাঙা পাখি, কার্তিকের ধান, নদীর কিনার, গ্রামের জনপদ ও সাধারণ মানুষ—সবই কবির অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। তাই উদ্দীপকের চিত্রের সঙ্গে কবিতার সাদৃশ্য স্পষ্ট।
ঘ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার চেতনাগত বৈসাদৃশ্যই বেশি।”- মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রকৃতি উদারভাবে আমাদেরকে তার সৌন্দর্য দিয়ে টানে। জন্মভূমির রূপে আমরা মুগ্ধ হই। মুগ্ধতার প্রকাশ ভিন্ন হলেও অনুভূতির দিক থেকে আমরা এক।
উদ্দীপকে মৃত্যুর পর আবার স্বদেশে ফিরে আসার আশা প্রকাশ পেয়েছে। কবি চিরচেনা প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে নিজ অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছেন। ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি বাস্তব জীবনের পরিচিত পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন। উদ্দীপকে কবি কল্পনা করেছেন যে মৃত্যুর পরও তিনি চিরচেনা পরিবেশে থাকবেন, আর কবিতায় কবি বাস্তবে ফিরে এসে নিজের অবস্থানের দৃঢ়তা দেখাচ্ছেন। এ কারণে উদ্দীপক ও কবিতার মধ্যে চেতনাগত পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
কবিতায় কবি স্বদেশের প্রেমে মুগ্ধ। উদ্দীপকের কবিও স্বদেশকে ঘিরে ভাবছেন, তবে তা কল্পনার। উদ্দীপকের কবি কল্পনা করেছেন মৃত্যুর পরও চিরচেনা পরিবেশে তিনি থাকবেন, আর ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কবি নিজেকে বাস্তব পরিবেশের একজন পরিচিত ব্যক্তি হিসেবে দাবি করেছেন। এভাবে উদ্দীপক ও কবিতার মধ্যে চেতনাগত বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ২। [ঢাকা বোর্ড ২০২০] সুমন ও মামুন ঢাকায় বসবাস করে। বহু বছর পর সুমন বাড়ি। ফিরলে গ্রামের লোকজন উৎসুক দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে থাকে। সুমন স্কুল বন্ধু ফরিদকে জড়িয়ে ধরে। খোঁজখবর নেয়। তার ক্লান্ত চোখের চাহনি দেখে মর্মাহত হয়, বাড়ির আমগাছে টিয়া-শালিক দেখে রোমাঞ্চিত হয়। অথচ মামুনের বাড়ি ফেরার সময়ই হয়ে ওঠে না। কল্পনায় সে জন্মস্থানের প্রতি টান অনুভব করলেও শহরে চাকচিক্যকে জীবনের অনুষঙ্গ করে নিয়েছে। ক. ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতায় কোন মাসের উল্লেখ আছে? খ. কদম আলী অকাল বার্ধক্যে নত কেন? বুঝিয়ে লেখ। গ. উদ্দীপকের সুমনের ভাবনার সাথে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার কবি ভাবনার কোন দিকের সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকে মামুন জন্মস্থানের প্রতি টান অনুভব করলেও ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার কবি ভাবনার সম্পূর্ণ প্রতিনিধিত্ব করে কি? মতামত দাও। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৩। [কুমিল্লা বোর্ড ২০১৭] মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক আমি তোমাদেরই লোক আর কিছু নয় এই হোক শেষ পরিচয়। ক. আহসান হাবীবের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী? খ. কবি ‘সর্বত্র থাকা’ বলতে কী বুঝিয়েছেন? গ. উদ্দীপকে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে- ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকটি ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার সমগ্র ভাব প্রকাশ করে কি? তোমার মতামত দাও। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৪। আমার দাদার দাদা এ বটের ছায়ায় বাজিয়েছিলেন বাঁশি, আমার দাদা এ আলে বসে দেখেছিলেন পাকা ধানের হাসি। আমার বাবা লাঙ্গল হাতে করছে জমি চাষ, আমারও সে লাঙ্গলের সাথেই চলছে বসবাস। ক. অকাল বার্ধক্যে নত কে? খ. ‘সামনে ধু ধু নদীর কিনার আমার অস্তিত্বে গাঁথা’- ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকটি তোমার পাঠ্য কোন কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? যুক্তিসহ বর্ণনা কর। ঘ. ‘কবিতা এবং উদ্দীপক উভয়ের ভাবার্থ অভিন্ন।’- উক্তিটির সার্থকতা বিচার কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৫। বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর, অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে চেয়ে দেখি ছাতার মতন বড় পাতাটির নিচে বসে আছে ভোরের দোয়েল পাখি- চারদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ জাম-বট কাঁঠালের-হিজলের-অশ্বত্থের করে আছে চুপ। ক. কবি তাঁর স্বদেশে থাকেন কোন নিয়মে? খ. জমিলার মায়ের রান্নাঘর শূন্য খাঁ খাঁ কেন? গ. উদ্দীপকে ফুটে ওটা চিত্রের সঙ্গে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার সমগ্র ভাব প্রকাশ করে কি? যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৬। লতাগুল্ম, বাঁশঝাড়, বাবুই পাখির বাস আর মধুমতি নদীটির বুক থেকে বেদনাবিহ্বল ধ্বনি উঠে মেঘমালা ছুঁয়ে ব্যাপর ছড়িয়ে পড়ে সারা বাংলায় ৷ ক. আহসান হাবিবের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী? খ. ‘আমার অস্তিত্বে গাঁথা’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? গ. উদ্দীপক ও ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার, সাদৃশ্যপূর্ণ দিকসমূহ আলোচনা কর। ঘ. উদ্দীপকের সাথে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার চেতনাগত বৈসাদৃশ্যই বেশি- যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর ৷ |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৭। অনেক অচেনা লাগে পরিচিত প্রিয় পথঘাট। এইখানে কুমোরেরা ছিলো, ঘোষেদের বাড়ি ছিলো এইখানে বটের ছায়ায়। মাধবীর বিয়ে হলো ও-পাড়ার স্বপনের সাথে তারাও এখানে নেই, কোথায় যে চলে গেছে-হয়তো আন্দামানে, হয়তো-বা অন্য কোথাও। সিরাজ হাঁটতে থাকে, বুদ্ধবাক্। আমিও একাকী হাঁটি। দিগন্তের অন্তরালে সূর্য ডুবে যায়। ক. কবি কার রান্নাঘরের শুকনো থালা সব চেনেন? খ. নদীর কিনার কীভাবে কবির অস্থিমজ্জায় গ্রথিত হয়ে আছে? গ. উদ্দীপকে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “মিল থাকলেও উদ্দীপকের মূলভাব এবং কবিতার মূলভাব পুরোপুরি এক নয়।”- মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৮। বাঙালির সনে মিশে প্রাণে প্রাণে থাকিব সতত জীবনে মরণে বাঙালি আমার আপনার জন বাঙালি আমার ভাই! সুখে দুঃখে তারা এসে মোর পাশে তোষে সদা মোরে মধুর সম্ভাষে আমিও বাঙালি তারাও বাঙালি বাংলা আমার জন্মভূমি! ক. ‘নিশিন্দা’ কী? খ. “আমি এই উধাও নদীর মুগ্ধ এক অবোধ বালক।”- ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকটি ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার কোন বিষয়টির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দীপকে কবির চেতনা এবং ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার কবির চেতনা একসূত্রে গাঁথা।”- মন্তব্যটির যথার্থতা প্রমাণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্নঃ ৯। [দিনাজপুর বোর্ড ২০১৬] বহুদিন পরে মনে পড়ে আজি পল্লিমায়ের কোল, ঝাউশাখে সেথা বনলতা বাঁধি হরষে খেয়েছি দোল। কুলের কাঁটার আঘাত সহিয়া কাঁচা পাকা কুল খেয়ে, অমৃতের স্বাদ যেন লভিয়াছি গাঁয়ের দুলালী মেয়ে। ক. কদম আলী কীসে নত? খ. ‘খোদার কসম আমি ভিনদেশি পথিক নই’- কবি কেন কসম করেছেন? গ. উদ্দীপকটি ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার সাথে কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকে ‘আমি কোনো আগন্তুক নই’ কবিতার সমগ্র ভাব প্রকাশিত হয়নি।- যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর |
নিচে উত্তরসহ আমি কোন আগন্তুক নই কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন পিডিএফ ফাইল দেওয়া হল।
আমি কোন আগন্তুক নই কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ
আরও পড়ুনঃ
রানার কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলা
বৃষ্টি কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর – ৯ম ও ১০ম শ্রেণির বাংলা
তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর